নিজস্ব প্রতিবেদক : খোলা স্টেশনের ঢোকা সত্ত্বেও পলিটেকনিকের দুই ছাত্র-ছাত্রী দর্শণার্থীকে ১০২০ টাকা জরিমানা করেছেন টাঙ্গাইল ঘারিন্দা রেল স্টেশন মাস্টার।
শনিবার (২৫ মার্চ) দুপুরে টাঙ্গাইল সদর উপজেলার ঘারিন্দা রেলস্টেশনে ঘটনাটি ঘটে।
অসামাজিক কার্যকলাপ আর বিনা টিকিটে ট্রেন ভ্রমণের দায়ে এই জরিমানা করার কথা স্টেশন মাস্টার বললেও ভুক্তভোগী দর্শনার্থী ছাত্র-ছাত্রীর দাবি করেছেন ঘুষের টাকা না পাওয়ার ক্ষোভে আর অভিভাবক আসায় জরিমানাটি করা হয়েছে।
টিকিট কাটতে ভোটার আইডি, জন্মনিবন্ধন বা পাসপোর্টের ফটোকপি প্রয়োজন হলেও জরিমানার জন্য দেয়া পদ্মা এক্সপ্রেস ট্রেনের টিএজি ০০১৫০৫৭৪ টিকিটটি কাটতে দর্শনার্থীর নেয়া হয়নি কোন প্রমাণপত্র।
টিকিট কালোবাজারীরোধে বাংলাদেশ রেলওয়ে ভোটার আইডি, জন্মনিবন্ধন বা পাসপোর্টের মাধ্যমে নিবন্ধন করে টিকিট সংগ্রহের নিয়ম থাকলেও জরিমানার টিকিটটি কিভাবে দিলেন স্টেশন কর্তৃপক্ষ; এমন দাবি তুলেছেন ভুক্তভোগীরা।
ভুক্তভোগী ছাত্র বলেন, আমরা দুইজন টাঙ্গাইল পলিটেকনিক থেকে ডিপ্লোমা সম্পন্ন করেছি।
আমার বান্ধবী তিন-চারদিন ধরে রাগ করে কথা বলছেনা।
আজ বান্ধবী বাড়ীতে যাওয়ার জন্য স্টেশনে এসেছে খবর পেয়ে আমি এখানে আসি।
আমাকে দেখে বান্ধবী রাগ করে স্টেশনে ভিতরে ফাঁকা রেল লাইনে যাওয়া চেষ্টা করে। এ সময় আমি তাকে বাঁধা দিই।
হাত দিয়ে ধরে তাকে জোরপূর্বক স্টেশনে নিয়ে আসি।
হঠাৎ দেখি স্টেশনের একজন এসে জানান, স্টেশন মাস্টার আমাদের ডেকেছেন।
তাৎক্ষনিকই আমরা স্টেশন মাস্টারের সাথে দেখা করি।
তবে স্টেশন মাস্টার রেলস্টেশনে ঢুকতে টিকিট লাগেসহ আমাদের নানা ধরণের অশ্লীল কথা বার্তা বলতে থাকায় আমি প্রতিবাদ করি।
এ সময় স্টেশনের একজন আমাকে এক হাজার টাকা ঘুষ দিয়ে চলে যেতে বলেন।
আমি রাজি না হয়ে আমার অভিভাবককে ডেকে আনি।
অভিভাবক আসায় বাধ্য হয়ে তারা নানা কারণ দেখিয়ে আমাদের মুচলেখা নিতে চায়।
আমরা মুচলেখা দিতে রাজি হয়নি বলে পরবর্তীতে তারা বিনা টিকিটি রেলভ্রমনের অপরাধ দেখিয়ে ১০২০ টাকা জরিমানা নিয়েছেন।
স্টেশনে উপস্থিত যাত্রীদের কথা –
স্টেশনে আগত বেশ কয়েকজন দর্শনার্থী বলেন, স্টেশনে আসলে টিকিট লাগে সেটি আমাদের জানা নেই।
শত শত লোক তো বিনা টিকিটেই স্টেশনে ঘুরছেন।
টিকিট কাটা বাধ্যতামূলক হলে স্টেশন কর্তৃপক্ষকে অবশ্যই সে ধরণের ব্যবস্থা রাখতে হবে।
হঠাৎ মন চাইলে একজনকে ধরে এভাবে জরিমানা করা হবে, এটি ঠিক নয়।
স্থানীয় রাসেল, মফিজসহ বেশ কয়েকজন বলেন, টিকিট কালোবাজারীর অপরাধে ইতোপূর্বে স্টেশন মাস্টার বদলী হয়েছিলেন।
আবার কিভাবে এ স্টেশনে আসলেন সেটি তারা বুঝতে পারছেন না।
এছাড়া স্টেশনে যাত্রী ও দর্শনার্থী আটকানোর বেশ কিছু অভিযোগ উঠছে স্টেশনে কর্মরতদের বিরুদ্ধে বলেও জানান তারা।
স্টেশন মাস্টারের কথা –
এ বিষয়ে ঘারিন্দা স্টেশন মাস্টার সোহেল খান জানান, অসামাজিক কার্যকলাপ আর বিনা টিকিটে ট্রেনের ভ্রমণের অভিযোগে ওই দুই ছাত্র-ছাত্রীকে রাজশাহী থেকে টাঙ্গাইল পর্যন্ত টিকিটমূল্যসহ ১০২০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
ভোটার আইডি, জন্মনিবন্ধন বা পাসপোর্টের ফটোকপি ছাড়া কিভাবে টিকিট কাটা হলো?
এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, টিকিট কাউন্টারের দায়িত্বরত আগুন নামের স্টাফের আইডি থেকে ওই টিকিটটি কাটা হয়েছে।
কালোবাজারীর অভিযোগে ইতোপূর্বে বদলী হওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে তিনি জানান, মহেড়া ফাঁকা ছিল বলে তাকে বদলী করা হয়েছিল। পুনরায় তিনি ঘারিন্দা স্টেশনেই দায়িত্ব পেয়েছেন। সম্পাদনা – অলক কুমার