নিজস্ব প্রতিবেদক : টাঙ্গাইল শহরের প্রানকেন্দ্রে অবস্থিত মেজর জেনারেল মাহমুদুল হাসান আদর্শ মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ পেতে জেলার শীর্ষ নেতাদের দৌঁড়দৌঁড়ি শুরু করেছেন বেশ কয়েকজন প্রার্থী।
প্রার্থীদের মধ্যে অনেকে আবার সরকারীদলের নেতাদের ম্যানেজ করতে নানাভাবে চেষ্টা ও তদবির চালিয়ে যাচ্ছেন।
এদিকে কলেজের বর্তমান ভাইস প্রিন্সিপালও অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ পেতে দৌঁড়দৌঁড়ি শুরু করেছেন।
তবে তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে নানা অপকর্ম ও নারী উত্যক্ত করার মত ঘটনার অভিযোগও পাওয়া গেছে।
প্রকৃত ঘটনা যা –
জানা গেছে, কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ পেতে এ পর্যন্ত ১২ জন প্রার্থী আবেদন করেছেন।
কলেজের ভাইস প্রিন্সিপাল আমিনুল ইসলামও তাদের মধ্যে একজন।
তিনিও নিয়োগ পেতে নানাভাবে দৌঁড়দৌঁড়ি চালাচ্ছেন। তবে তার বিরুদ্ধে আর্থিক লেনদেনসহ নানা অপকর্মের অভিযোগ রয়েছে।
নিজ কলেজে অনেক সময় নানা হঠকারী কর্মকান্ড, শিক্ষক-কর্মচারীদের সাথে দুর্ব্যবহার, অধীনস্থদের চাকরী থেকে বরখাস্তের হুমকি, ভর্তি এবং ফরম ফিলাপ সংক্রান্ত নানা অনিয়ম দুর্নীতি ও পেশীশক্তি প্রদর্শনের অভিযোগও উঠেছে।
এছাড়াও তার বিরুদ্ধে নারী উত্যক্ত করার মত গুরুতর অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ভূক্তভোগী এক নারী ২০১৫ সালের ২৯ মার্চ কলেজের অধ্যক্ষ বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
ওই নারী কলেজের খন্ডকালীন ছোট একটি পদে দায়িত্ব পালন করতেন।
এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে কলেজের গভর্নিং বোর্ড আমিনুল ইসলাম ওরফে উজ্জলকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়।
তাকে সাময়িক বরখাস্তের সিদ্ধান্ত গ্রহণের উদ্যোগ নিলেও প্রভাবশালী কোন মহলের চাপের কারণে তা বাস্তবায়ন হয়নি।
এ কারণে তখনকার তদন্ত কমিটির আহবায়ক নিজের আত্মসম্মান রক্ষার্থে দায়িত্ব থেকে স্বেচ্ছায় অব্যাহতি নেন।
এছাড়াও আমিনুল ইসলাম কলেজের নিয়ম বহির্ভূত হটকারী এক সিদ্ধান্ত নেয়ার কারণে তৎকালীন কলেজ পরিচালনা পরিষদ শাস্তিস্বরূপ ২০১৯ সালের ২৫ আগস্ট থেকে ২৪ অক্টোবর পর্যন্ত দুই মাস কলেজের সকল কর্মকান্ড থেকে তাকে বিরত থাকার নির্দেশ দেয়।
এসময় কলেজ পরিচালনা কমিটির সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন, টাঙ্গাইল-০৫ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব মো. ছানোয়ার হোসেন।
২০১৪ সালের কলেজের নির্বাচনী পরীক্ষায় অংশ না নেয়া এবং তিন বিষয়ে অকৃতকার্য ছাত্রদেরকেও বিশেষ সুবিধা নিয়ে ফরম পূরণের অনুমতি প্রদান করেন উপাধ্যক্ষ আমিনুল ইসলাম উজ্জ্বল।
এ নিয়ে ওই বছরের ১৭ জানুয়ারি কলেজের গভর্নিং বডির সভায় তাকে অপরাধী হিসেবে গণ্য হয়।
গভর্নিং বডির সভাপতির কাছে ক্ষমা চেয়ে বরখাস্ত হওয়া সে যাত্রায় রক্ষা পান তিনি।
সহকর্মীদের কথা –
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন শিক্ষক ও কর্মচারী অভিযোগ করেন, তার এ সকল বিতর্কিত কর্মকান্ডের কারণে কলেজের অনেক শিক্ষক-শিক্ষিকা তার অফিস কক্ষে যেতে স্বাচ্ছন্দবোধ করেন না।
আমিনুল ইসলাম এসব অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন আখ্যা দেন।
ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের মন্তব্য –
এ সময় লিখিত অভিযোগপত্রসহ সকল কাগজপত্র দেখালে বর্তমান ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. ইব্রাহীম প্রতিবেদককে বলেন, এসব আগের অধ্যক্ষের সময়ে; আমার সময়ের না।
স্বাক্ষরিত কাগজপত্রগুলোর স্বাক্ষর সঠিক বলেও মত দেন তিনি।
যদিও আমিনুল ইসলামের অফিসকক্ষে বক্তব্য নেয়ার সময় পাশে বসা বিএনপির অঙ্গসংগঠন জাসাস-এর টাঙ্গাইল জেলার সাধারণ সম্পাদক ও কলেজের দর্শন বিভাগের শিক্ষক মাসুদুর রহমান খান তুহিন আমিনুল ইসলামের পক্ষে সাফাই গান।
তিনি বলেন, এসব আগের ঘটনা। এগুলো নিস্পত্তি হয়ে গেছে।
এ অবস্থায় একজন সৎ নিষ্ঠাবান ও ভাল চরিত্রের অধিকারী কোন প্রার্থীকে অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ দেয়া হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।