প্রতি বছরই কোটি কোটি অনলাইন অ্যাকাউন্ট ও ব্যক্তিগত তথ্য হ্যাকারদের হাতে চলে যাচ্ছে। তবে ২০২৪ সালে এ পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। সাইবার নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠান সার্ফশার্ক এর সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালের তুলনায় গত বছর অনলাইন তথ্য ফাঁসের পরিমাণ প্রায় ৮ গুণ বেড়েছে।
প্রতিবেদনে জানানো হয়, ২০২৩ সালে বিশ্বব্যাপী যেখানে প্রায় ৭৩ কোটি অনলাইন অ্যাকাউন্ট হ্যাক হয়েছিল, ২০২৪ সালে সেই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৫৫০ কোটিতে। অর্থাৎ গড়ে প্রতি সেকেন্ডে ১৮০টির বেশি অ্যাকাউন্ট হ্যাক হয়েছে।
বিশ্বব্যাপী তথ্য ফাঁসের শীর্ষ ১০ দেশের তালিকায় নতুন করে জায়গা করে নিয়েছে চীন, জার্মানি ও পোল্যান্ড। চীন ১২তম অবস্থান থেকে উঠে এসেছে শীর্ষে, জার্মানি ১৬তম থেকে ৫ম স্থানে এবং পোল্যান্ড ১৭তম থেকে ১০ম স্থানে উঠে এসেছে। রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, ভারত, ব্রাজিল, ইতালি ও যুক্তরাজ্য দুই বছরই শীর্ষ ১০-এর তালিকায় রয়েছে।
সার্ফশার্কের তথ্য অনুযায়ী, শুধু চীন, রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রেই গত বছর বিশ্বব্যাপী অনলাইন তথ্য ফাঁসের প্রায় অর্ধেক ঘটনা ঘটেছে।
অন্যদিকে, ক্যাসপারস্কির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৩-২৪ সালের মধ্যে প্রায় ২৩ লাখ ব্যাংক কার্ডের তথ্য ডার্ক ওয়েবে ফাঁস হয়েছে। এতে গ্রাহকদের আর্থিক ক্ষতির ঝুঁকি মারাত্মকভাবে বেড়েছে। শুধু ২০২৪ সালেই ৯০ লাখের বেশি ডিভাইস ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
২০২৪ সালে ঘটে যাওয়া সবচেয়ে বড় তথ্য ফাঁসের ঘটনায় একাই ৩০০ কোটির বেশি ই-মেইল ঠিকানা ফাঁস হয়েছে। গবেষকরা জানিয়েছেন, এসব অ্যাকাউন্টের মধ্যে সবচেয়ে বেশি রাশিয়ার, এরপর যুক্তরাষ্ট্র, চীন, জার্মানি ও ফ্রান্সের। তবে হ্যাকাররা দাবি করেছে, নতুন করে হ্যাক নয়—বরং পুরোনো ডাটাগুলো একত্রিত করে প্রকাশ করা হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুধু ব্যক্তি নয়, বরং বড় বড় প্রতিষ্ঠান ও কোম্পানিও এখন তথ্য ফাঁসের সবচেয়ে বড় ঝুঁকিতে রয়েছে।