বিশেষ প্রতিবেদক : আগে যারা আসামি পক্ষের আইনজীবী ছিলেন, আওয়ামী লীগের পতনের পর এখন তারা রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী। তাই টাঙ্গাইলে বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারুক হত্যা মামলার রায় নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন নিহত ফারুক আহমেদে ছেলে আহমেদ সুমন মজিদ। এই শঙ্কা নিয়েও তিনি আইনের প্রতি আস্থা রেখেছেন পিতা হত্যার সঠিক বিচার পাওয়ার।
গতকাল ১ ফেব্রুয়ারি রাতে মুঠোফোনে আলাপকালে এই রায়ের শঙ্কা ও আইনের প্রতি আস্থার কথা প্রকাশ করেন নিহত ফারুক আহমেদে ছেলে আহমেদ সুমন মজিদ।
জানা যায়, বহুল আলোচিত বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারুক হত্যা মামলার রায় হবে রবিবার (২ ফেব্রুয়ারি)। এতে আলোচিত খান পরিবারের সাবেক এমপিসহ চার ভাই আসামী রয়েছেন।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০১৩ সালে ১৮ জানুয়ারিতে জেলা আওয়ামী লীগের লীগের সদস্য ও বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমেদের লাশ তার নিজ এলাকা কলেজ পাড়া থেকে উদ্ধার করা হয়। এই ঘটনায় ফারুক আহমেদের স্ত্রী নাহার আহমেদ বাদী হয়ে সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলাটিতে কোন আসামির নাম উল্লেখ করা হয়নি। এরপর গোয়েন্দা পুলিশ সন্দেহভাজন আনিসুল এবং মোহাম্মদ আলীকে গ্রেপ্তার করে আদালতে প্রেরণ করেন।
আদালতে দুজনের জবানবন্দিতে খান পরিবারের চার ভাইয়ের নাম উঠে আসে। সেই মামলায় আসামি করা হয় ১৪ জনকে। এরমধ্যে খান পরিবারের বড় সন্তান ২০১২ সালে টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনের সংসদ সদস্য হিসাবে নির্বাচিত আমানুর রহমান খান রানা। আরেক আসামী তার ছোট ভাই টাঙ্গাইল পৌরসভার সাবেক মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তি। আসামী আরেক ছোট ভাই ব্যবসায়ী নেতা জাহিদুর রহমান খান কাকন ও সবার ছোট ভাই তৎকালীন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি সানিয়াত খান বাপ্পা।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত সরকারি কৌশলী মো. সাইদুর রহমান বলেন, যুক্তিতর্ক উপস্থাপনকালে ২৭ জন সাক্ষীর জবানবন্দী, জেরা ও কয়েকজন আসামিসহ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি পর্যালোচনা করে আদালতে শুনানী হয়েছে।
নিহত ফারুক আহমেদের ছেলের কথা –
এ বিষয়ে নিহত ফারুক আহমেদের ছেলে মজিদ আহমেদ সুমন বলেন, মামলা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আসামীরা বিঘœ ঘটাতে মরিয়া হয়ে পড়ছিলো। তারা চায় যে কোন মুল্যে মামলা থেকে খালাস পেতে। তিনি বলেন, আশা করছি আসামীদের শাস্তি হবে। এসময় নিহত ফারুক আহমেদের ছেলে আহমেদ সুমন মজিদ আইনের প্রতি আস্থা আছে, সেই সাথে তিনি শঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, এতদিন যারা মামলার আসামি পক্ষের আইনজীবী ছিলেন, এখন তারা রাষ্ট পক্ষের আইনজীবী, সেক্ষেত্রে ন্যায় বিচার পাওয়ার ক্ষেত্রে একটি শঙ্কা রয়েছে। তারপরও আমরা এতিম তিন ভাই-বোন এই মামলায় আমাদের পিতার হত্যার সঠিক বিচার পাবো, আইনের প্রতি এই আস্থা রয়েছে। এসময় তিনি পিতা হত্যার বিচার পেতে শেষ রক্ত বিন্দু দিয়ে লড়ে যাওয়ার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।