নিজস্ব প্রতিবেদক : টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার ভরসরাই উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি অনিয়মতান্ত্রিকভাবে গঠনের অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয় সাংসদের ইশারায় তার পকেট কমিটি করা হয়েছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।
এছাড়াও প্রিজাইডিং অফিসারের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ করেন অভিভাবক সদস্য ও এলাকাবাসী।
জানা যায়, গত ২৭ মার্চ (রবিবার) কালিহাতী উপজেলার না ইউনিয়নের ভরসরাই উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি নির্বাচনের দিন নির্ধারিত ছিল।
সে উপলক্ষে পূর্বেই কমিটির অন্যান্য সদস্য যেমন একজন দাতা সদস্য, একজন মহিলা অভিভাবক সদস্য, চারজন অভিভাবক সদস্য ও তিনজন শিক্ষক প্রতিনিধি নির্বাচিত করা হয়।
পরে এই সদস্যরা গোপন ব্যালটের ভোটের মাধ্যমে সভাপতি নির্বাচনের দাবি করলেও প্রিজাইডিং অফিসার তা কর্ণপাত করেননি।
স্থানীয়দের অভিযোগ –
এবিষয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয়রা বলেন, প্রিজাইডিং অফিসার গোপন ব্যালটে ভোট না নিয়ে উন্মুক্তভাবে প্রার্থীদের পক্ষে-বিপক্ষে সমর্থন প্রকাশ করতে বলেন।
এতে কয়েকজন সদস্য তাদের মতামত প্রকাশ করেননি। এইভাবে একই এলাকার দুইজন প্রার্থীর সামনে একজনের পক্ষে অপরজনের বিপক্ষে অবস্থান নেয়ার প্রস্তাব দেয়া ঠিক হয়নি।
এটা স্থানীয় এমপি’র নির্দেশে সম্পূর্ণ উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে করা হয়েছে বলেও তারা অভিযোগ করেছেন।
অভিভাবক সদস্য ও প্রাথীর অভিযোগ –
অভিভাবক সদস্য মো. শফিকুল ইসলামসহ অন্যান্য অভিভাবক সদস্যরা বলেন, আমরা সভাপতি নির্বাচন বর্জন করেছি।
আমরা প্রিজাইডিং অফিসারকে বলেছি, যেহেতু দুইজন প্রার্থীই আমাদের গ্রামের, তাই আমরা গোপন ব্যালটে ভোটের মাধ্যমে যাবো; উনি তা করেননি।
প্রিজাইডিং অফিসার আমাদের কথা না শুনে একদিক থেকে নাম লিখতে শুরু করেন আর স্বাক্ষর নিতে থাকেন। পরে আবু বকর সিদ্দিককে সভাপতি ঘোষনা করেন।
প্রতিদ্বন্দ্বী সভাপতি প্রার্থী মো. খাদেমুল ইসলাম বলেন, আমি ভেতরে যাইনি। সদস্যরা বাইরে এসে আমাকে বললো, প্রিজাইডিং অফিসার নিজের মতো করে সভাপতি মনোনীত করেছেন।
কেন করেছেন, কার নির্দেশে করেছেন, তা এলাকার লোক জানে, তারা বলেছে।
নতুন সভাপতির বক্তব্য –
এবিষয়ে নতুন মনোনীত সভাপতি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর (অবঃ) ওয়ারেন্ট অফিসার ও নাগবাড়ি ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মো. আবু বকর সিদ্দিক বলেন, কালিহাতীর উন্নয়নের রূপকার, বিগত ৫০ বছরে কালিহাতীর যে উন্নয়ন হয়নি; বর্তমান সাংসদ আলহাজ্ব হাসান ইমাম খান সোহেল হাজারীর নেতৃত্বে কালিহাতীর প্রতিটি প্রান্তে তার চেয়ে বেশি উন্নতি হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, বর্তমানে উন্নয়নের জোয়ার বয়ে যাচ্ছে। আমি তার নেতৃত্বে এই স্কুলের সার্বিক উন্নয়নের চেষ্টা করবো।
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বক্তব্য –
প্রিজাইডিং অফিসার দায়িত্বে ছিলেন বিআরডিবি কালিহাতী উপজেলার কর্মকর্তা রুবেল মিয়া।
তিনি সকল অভিযোগ ভিত্তিহীন আখ্যা দিয়ে বলেন, এক প্রার্থীর পক্ষে প্রস্তাবকারী সমর্থনকারী ছিল; এসময় তিনি গোপন ব্যালটে ভোট গ্রহণের বিষয়টিতে কোন মন্তব্য করতে চাননি।
এবিষয়ে কালিহাতী উপজেলা নির্বাহী অফিসার উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাজমুল হুসেইন বলেন, এই বিষয়ে আমি কিছু জানি না।
তবে যদি কেউ লিখিত অভিযোগ দেন, তবে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এবিষয়ে টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতী) আসনের সাংসদ আলহাজ্ব হাসান ইমাম খান সোহেল হাজারী বলেন, বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি গোপন ব্যালটের মাধ্যমে হয় বলে কখনো শুনিনি।
তবে যে লোকটি সভাপতি হয়েছেন, তিনি অত্যন্ত ভালো মানুষ। সারাদিন ওই স্কুল নিয়েই থাকেন; গাছ লাগান, পরিচর্যা করেন শুনেছি।
সেজন্য তার প্রতি আমারও একটু সফট কর্ণার ছিল যে, লোকটি সভাপতি হলে বিদ্যালয়ের উন্নতি হবে; পড়াশোনার মান বাড়বে। সম্পাদনা – অলক কুমার