অবরুদ্ধ ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় একদিনেই কমপক্ষে আরও ৩৯ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন প্রায় ১০০ জন। মঙ্গলবার (১৩ মে) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
আল জাজিরা জানায়, গাজার আকাশে ড্রোন ও এফ-১৬ যুদ্ধবিমানের গর্জনে আতঙ্কিত স্থানীয়রা। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পরিবারগুলো চরম খাদ্য সংকটে ভুগছে, সন্তানদের খাবার দিতে পারছেন না অনেক বাবা-মা। অনেক শিশুই অনাহারে দিন কাটাচ্ছে।
এই পর্যন্ত চলমান সংঘাতে গাজায় নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা ৫২ হাজার ৮৬০ ছাড়িয়ে গেছে, যা এক নজিরবিহীন মানবিক বিপর্যয়ের ইঙ্গিত দেয়।
এদিকে হামাস জানিয়েছে, বন্দী মুক্তির প্রক্রিয়া এবং যুদ্ধবিরতি আলোচনা একটি “ইতিবাচক অগ্রগতি”। তারা বলছে, মানবিক সাহায্যের প্রবেশ এবং গাজার পুনর্গঠনের পথ তৈরি হচ্ছে। তবে জাতিসংঘ সমর্থিত বিশেষজ্ঞ প্যানেল সতর্ক করে বলেছে, গাজা দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে এবং সেখানে অন্তত ৫ লাখ মানুষ চরম খাদ্যাভাব ও অনাহারের মুখোমুখি।
সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে আলোচনার এক গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের দ্বৈত নাগরিক এবং ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর সদস্য এডান আলেকজান্ডারকে মুক্তি দিয়েছে হামাস। এই মুক্তি দেওয়া হয় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য সফরের প্রাক্কালে।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, যুদ্ধবিরতি আলোচনার জন্য কাতারে মধ্যস্থতাকারী পাঠানো হবে। তবে আলেকজান্ডারের মুক্তি এবং আলোচনার ঘোষণা সত্ত্বেও ইসরায়েল গাজায় হামলা অব্যাহত রেখেছে।
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক গাজা উপত্যকার ওপর থেকে অবরোধ তুলে নেওয়ার জন্য ইসরায়েলকে আহ্বান জানিয়েছেন।
এই মুহূর্তে গাজা বিশ্বের সবচেয়ে সংকটাপন্ন মানবিক এলাকা হিসেবে পরিণত হয়েছে, যেখানে প্রতিদিন বাড়ছে হতাহতের সংখ্যা এবং সংকুচিত হচ্ছে বেঁচে থাকার সুযোগ।