চার বছর পর আবারো জেগে উঠেছে ইন্দোনেশিয়ার মাউন্ট সিনাবাং আগ্নেয়গিরি

ডেস্ক নিউজ : ইন্দোনেশিয়ায় সোমবার মাউন্ট সিনাবাং’ আগ্নেয়গিতে অগ্ন্যুৎপাত শুরু হয়েছে। ওই অগ্ন্যুৎপাতে আকাশে ছাই, ধোয়া ও গ্যাসের উদগিরণ দেখা যায় পাঁচ হাজার মিটার পর্যন্ত। বর্তমানে আগ্নেয়গিরি এলাকার স্থানীয়রা ধূসর ছাইয়ে ঢাকা পড়েছে।

এর আগে সুমাত্রা দ্বীপের ওই আগ্নেয়গিরিটি ২০১০ সালে সক্রিয় হয়ে ওঠে। সর্বশেষ ২০১৬ সালে এতে মারাত্মক অগ্ন্যুৎপাত হয়েছিল।

সাম্প্রতিক দিনগুলোতে আগ্নেয়গিরিতে উত্তেজনা চোখে পড়ে। সপ্তাহখানেক আগে ছোট ছোট অগ্ন্যুৎপাতও ঘটতে দেখা গেছে।

তবে এখনো আহত বা মৃত্যুর কোনো খবর পাওয়া যায়নি। কর্তৃপক্ষ সম্ভাব্য লাভা প্রবাহ সম্পর্কে সবাইকে সতর্ক করেছে।

ইন্দোনেশিয়ার আগ্নেয়গিরি ও ভূ-তাত্তি¡ক দুর্যোগ প্রশমন কেন্দ্র এক বিবৃতিতে বলেছে, আশেপাশের বাসিন্দাদের সম্ভাব্য লাভার বিষয়ে সজাগ থাকার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। এখন আগ্নেয়গিরিটির সতর্কতা স্থিতি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ স্তরে রয়েছে।

ইন্দোনেশিয়ার ভলক্যানোলজি অ্যান্ড জিওগ্রাফিক্যাল হ্যাজার্ড মিটিগেশন সেন্টারের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সবার জন্য সতর্কবার্তা জারি করা হচ্ছে। সিনাবাংয়ের কাছে রেড জোন এলাকা এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। আগ্নেয়গিরির পাশে আগেই “নো-গো জোন” ঘোষণা করা হয়েছিল। সেখানে এখন কেউ বসবাস করে না। তবে কাছেই বসবাসকারী ছোট উপজাতি সম্প্রদায়ের গ্রাম নামান তেরান অগ্ন্যুৎপাতের কারণে ছাইয়ের আস্তরণে ঢেকে গেছে।

তেরান গ্রামের রেনকানা সিতেপু জানিয়েছেন, ব্যাপারটি অনেকটা ম্যাজিকের মতো হলো। ছাই ভেসে মূহুর্তের মধ্যে যেন রাত নেমে এল আমাদের এলাকায়। প্রায় ২০ মিনিট সম্পূর্ণ অন্ধকার ছিল আমাদের গ্রাম। ফলে বেশ কিছু ফসলও নষ্ট হয়েছে বলে জানান তিনি।

প্রায় ৪০০ বছর পর এটি ৫ম বিস্ফোরণ। ২০১০ সালে সিনাবাং আগ্নেয়গিরিটি প্রথমবারের মতো গর্জে উঠেছিল। তারপর ২০১৩ সালে এটি আবারো সক্রিয় হয়ে ওঠে। ২০১৬ সালে, সিনাবাংয়ের অগ্নুৎপাতে প্রায় সাতজনের মৃত্যু হয়। আর ২০১৪ সালের বিস্ফোরণে মারা গিয়েছিল ১৪ জন।

২০১৮ সালের শেষদিকে, জাভা ও সুমাত্রা দ্বীপপুঞ্জের মধ্যবর্তী স্থানে একটি আগ্নেয়গিরি বিস্ফোরণ হয়, এ ঘটনায় ভূগর্ভস্থ ভূমিধসের ফলে সুনামির তৈরি হয় যাতে ৪০০ জনেরও বেশি মানুষ মারা যায়।

‘রিং অফ ফায়ার’র অবস্থানের কারণে ইন্দোনেশিয়ায় ১৩০টিরও বেশি সক্রিয় আগ্নেয়গিরি রয়েছে। ফলে প্রশান্ত মহাসাগরের চারদিকে টেকটোনিক প্লেটের সীমানার ঘন ঘন ভূমিকম্প আঘাত হানে। সম্পাদনা – অলক কুমার