নিজস্ব সংবাদদাতা : অপহরণ ও মুক্তিপণ দাবির ৪৮ ঘণ্টা পর এক শিশুর গলাকাটা ও মুখমণ্ডল বিকৃত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
শুক্রবার দুপুর দুইটার দিকে উপজেলার দাড়িয়াপুর উত্তরপাড়া গ্রামের গুইয়ার বাইদ এলাকার একটি ড্রেন থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
নিহত শিশুর নাম সামিয়া (৯), সে দাড়িয়াপুর উত্তরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী এবং ওই গ্রামেরই রঞ্জু মিয়ার মেয়ে।
সামিয়া বুধবার সকাল ১০টার দিকে সহপাঠীদের সঙ্গে প্রাইভেট পড়ে বাড়ি ফেরার পথে অপহৃত হন।
এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার ওই শিক্ষার্থীর বাবা রঞ্জু মিয়া বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামি করে সখীপুর থানায় মামলা করেন।
পুলিশ, পারিবারিক ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বুধবার বিদ্যালয় বন্ধ ছিল।
ওইদিন সকাল সাড়ে সাতটার দিকে এক কিলোমিটার দূরে ওই বিদ্যালয়ে গিয়ে সহপাঠীদের সঙ্গে প্রাইভেট পড়েন সামিয়া।
প্রাইভেট শেষে সকাল ১০টার দিকে বিদ্যালয় থেকে বাড়ি ফেরার পথে ২০০ মিটার দূরে গুইয়ার বাইদ এলাকা থেকে সামিয়া অপহৃত হন।
সহপাঠীরা স্থানীয় একটি দোকানে কেনাকাটা করতে দেরি করায় ওই শিশুটি একাই বাড়ি ফিরছিল।
এদিকে বাড়ি ফেরার সময় পার হওয়ার পরও না ফেরায় ওইদিন বেলা ১১টার দিকে ওই শিক্ষার্থীর মা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে মোবাইলে ফোন দেন।
শিক্ষকের বক্তব্য –
শিক্ষক জানান, সামিয়া প্রাইভেট শেষ করে অনেক আগেই চলে গেছে।
এ খবরে ওই শিক্ষার্থীর মা মেয়েকে খুঁজতে বাড়ি থেকে বের হলে রাস্তার মাঝামাঝি এলাকায় পৌঁছলে তার মেয়ের জুতা পড়ে থাকতে দেখেন।
এর কিছুক্ষণ পরই তার মোবাইল ফোনে একটি অডিও বার্তায় পাঁচ লাখ টাকা ‘মুক্তিপণ’ দাবি করা হয়।
অডিও বার্তায় বলা হয়, ‘আসসালামু আলাইকুম। আপনার মেয়ে ভালো আছে।
টাঙ্গাইলে আছে, আজকের মধ্যে পাঁচ লাখ টাকা দিলে মেয়ে পাবেন।
বিষয়টি পুলিশ ও এলাকার কাউকে জানাবেন না, জানালে আপনার মেয়ের ক্ষতি হবে।’
এদিকে স্থানীয় লোকজন শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে ওই মরদেহ দেখে পুলিশে খবর দেয়।
এ ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
খবর পেয়ে বিকেল ৩টার দিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন টাঙ্গাইল পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) মো. শরফুদ্দিন, টাঙ্গাইল ডিবি পুলিশের ইনচার্জ (দক্ষিণ) মো. হেলাল উদ্দিন বিপিএম, থানার ওসি রেজাউল করিম।
মেয়েটির মা রূপা বেগম মেয়ের গলা কাটা ও মুখমণ্ডল বিকৃত মরদেহ দেখে বারবার জ্ঞান হারাচ্ছেন; জ্ঞান ফিরলেই তিনি মেয়ে হত্যার বিচার দাবি করছেন।
পুলিশের বক্তব্য –
সখীপুর থানার ওসি রেজাউল করিম বলেন, ড্রেনের মধ্যে মাটি দিয়ে পুতে রাখা ও মুখ বিকৃত অবস্থায় মরদেহটি উদ্ধার করা হয়েছে।
ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ টাঙ্গাইল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হচ্ছে। রহস্য উদঘাটনে কাজ করছে পুলিশ।