টাঙ্গাইলের পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের ভাল্লুককান্দী এলাকায় ৭ মাসের অন্তঃসত্তা গৃহবধূ লাকী বেগম (২২) ও তার চার বছরের শিশুকন্যা আলিফাকে কুপিয়ে ও জবাই করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। শনিবার দিবাগত গভীর রাতে এ ঘটনা ঘটে। লোমহর্ষক এ ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। নিহতরা ওই এলাকার আলামিনের স্ত্রী ও কন্যা।
স্থানীয় পারভেজ ও শিপনসহ অনেকেই জানান, নিহত গৃহবধূ লাকীর স্বামী আলামিন এলাকার আসাদ মার্কেটে মোবাইল ফোন-ফ্যাক্সের দোকান করেন। ব্যবসার কারণে প্রায়ই তিনি অধিকরাতে বাড়িতে ফিরতেন। নির্জনতার সুযোগে দুর্বৃত্তরা আলামিনের স্ত্রী ও কন্যাকে হত্যার পর তার ঘরে লুটপাট চালিয়ে নগদ ৮ লাখ টাকা নিয়ে যায়। নিহত শিশু আলিফা কচুয়াডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণির ছাত্রী।
নিহত লাকীর স্বামী আলামিন বলেন, শনিবার দিবাগত রাত প্রায় সাড়ে ১২টার দিকে বাড়িতে গিয়ে দেখেন গেটটি খোলা। এ সময় তিনি বাড়ির ভিতরে ঢুকতেই প্রথমে রক্তাক্ত অবস্থায় শিশুকন্যা আলিফাকে মাটিতে পড়ে থাকতে দেখে চিৎকার দেন। চিৎকারে প্রতিবেশীরা ঘটনাস্থলে এসে বাড়ির উঠানে রক্তাক্ত অবস্থায় তার স্ত্রী লাকীকেও পড়ে থাকতে দেখেন। পরে তারা মাটিতে পড়ে থাকা স্ত্রী-কন্যার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে পুলিশে খবর দেয়।
এসময় তিনি বলেন, আমি বিকাশের ব্যবসা করি, সে কারণে আমার বাড়িতে সবসময় কিছু না কিছু ক্যাশ টাকা থাকে। গতরাতেও ক্যাশ আট লাখ টাকা আলমারিতে ছিলো। হত্যাকারীরা স্ত্রী এবং কন্যা সন্তানকে জবাই করে হত্যা করে টাকা নিয়ে চলে গেছে। এছাড়া বাসার আর কিছুই নেয়নি। আমি আমার স্ত্রী সন্তান চাই। আমার স্ত্রী সন্তানের হত্যাকারীদের বিচার চাই। এসময় আলামিন আরো বলেন আমার স্ত্রী সাত মাসের অন্তসত্বা আর এক মাস পরেই আরো একটি বাচ্চা হবে। আমার সুখের সংসার ছিলো। হত্যাকারীরা আমার সব কেরে নিয়েছে বলে কান্নায় ভেঙ্গে পরছেন আলামিন।
স্থানীয়রা জানান, ছেলেটি খুবই ভালো, কারও সাথেই তার কোন বিরোধ নাই। হত্যাকারীরা তার টাকার লোভেই এই হত্যাকা- ঘটাতে পরে বলে মানে করছেন। হত্যাকারী যেই হোক তাকে দ্রুত গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবীও জানিয়েছেন তারা।
এ প্রসঙ্গে টাঙ্গাইল মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) মীর মোশাররফ হোসেন জানান, শনিবার দিবাগত রাত ১২.০৫ মিনিটের দিকে কে বা কারা আলামিনের বাড়িতে ঢুকে স্ত্রী-কন্যাকে কুপিয়ে ও জবাই করে হত্যা করে। এ ঘটনায় এখনো কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। মা ও শিশুর মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা করার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও জানান ওসি।
এদিকে রোববার (১৩ অক্টোবর) সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন টাঙ্গাইল জেলা পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায়। তিনি দ্রুত আসামিদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে বলে আশ^াস দিয়েছেন। তবে এই হত্যাকা-ের ঘটনায় এখনও কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। তবে খুব শীঘ্রই আসামি গ্রেফতার করা হবে বলে জানান তিনি। মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।