টাঙ্গাইলের কালিহাতীর দেউপুর গ্রামের পোল্ট্রি খামারি মো. জিন্নাহ নিজের পৈত্রিক সম্পত্তি বন্ধক রেখে ঋণ ও সঞ্চয় মিলিয়ে প্রায় ৩০ লাখ টাকা খরচ করে তিন হাজার লেয়ার মুরগি পালন করছেন। প্রতিদিন আড়াই হাজার ডিম উৎপাদন হলেও বিক্রিতে ক্ষতি হচ্ছে প্রতিদিন প্রায় পাঁচ হাজার টাকা।
জিন্নাহ জানান, জানুয়ারি থেকে প্রতি ডিমে দুই থেকে আড়াই টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে। প্রতিটি ডিম উৎপাদনে খরচ পড়ছে ১০ টাকা ২০ পয়সা, অথচ বাজারে বিক্রি হচ্ছে সাড়ে সাত টাকায়।
জিন্নাহর মতো ভূঞাপুর, ঘাটাইল ও সখীপুরের অনেক প্রান্তিক খামারি ডিমের দাম কমে যাওয়ায় দেউলিয়া হচ্ছেন। খামারিরা বলছেন, খাদ্য ও ওষুধের দাম না কমলেও ডিমের দাম অস্বাভাবিকভাবে কমছে। ফলে অনেকেই ঋণ আর জমি বিক্রি করে খামার চালাচ্ছেন, তাতেও টিকে থাকতে পারছেন না।
টাঙ্গাইল পার্ক বাজারের ব্যবসায়ী আমজাদ মিয়া জানান, দাম কমলেও বিক্রি নেই। আগে দিনে ১২-১৩ হাজার ডিম বিক্রি হতো, এখন সাত হাজার বিক্রি করতেও হিমশিম খেতে হচ্ছে।
জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের তথ্য বলছে, এক যুগ আগে জেলায় প্রতিদিন তিন কোটি ডিম উৎপাদন হলেও এখন হচ্ছে মাত্র ৩২ লাখ। খামারি সংখ্যা ২০ হাজার থেকে নেমে আড়াই হাজারে ঠেকেছে।
খামারি হাসমত আলী বলেন, দাম কিছুটা বাড়লেই প্রশাসন জরিমানা করে, আবার বিদেশ থেকে ডিম আমদানি হয়। দাম যখন পড়ে যায়, তখন আর বিকল্প থাকে না। প্রান্তিক খামারিদের টিকিয়ে রাখতে সরকারকে রপ্তানির ব্যবস্থা ও ন্যূনতম দাম নির্ধারণের দাবি জানিয়েছেন তিনি।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম বলেন, সরকার নির্ধারিত দাম কার্যকর করতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। পাশাপাশি খামারিদের বায়োসিকিউরিটি মেনে উৎপাদন খরচ কমানোর পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।