ঈদকে সামনে রেখে তিন দিন বন্ধ রাখার পর রোববার থেকে দ্বিতীয় দফায় টাঙ্গাইল শহরের মার্কেট গুলো খুলে দিয়েছে জেলা প্রশাসন। সরকার নির্ধারিত স্বাস্থ্য বিধিমালা মেনে ব্যবসা পরিচালনা করার শর্ত পূরণ করায় দুপুরে জেলা প্রশাসক মো. শহীদুল ইসলাম এ নির্দেশনা দেন।
দুপুরে শহরের বিভিন্ন মার্কেট ঘুরে এ সিদ্ধান্ত নেন তিনি। কিন্তু স্বাস্থ্য বিধি না মানায় পূণরায় ১৪ মে থেকে মার্কেট বন্ধ করতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এক বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে।
বিভিন্ন মার্কেট পরিদর্শনকালে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. মোশারফ হোসেন খান, পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায়, পৌরসভার মেয়র জামিলুর রহমান মিরন, প্রেসক্লাব সভাপতি জাফর আহমেদ, টাঙ্গাইল চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ড্রাটিজের সভাপতি খান আহমেদ শুভ, সাধারণ সম্পাদক গোলাম কিবরিয়া প্রমুখ।
রোববার দুপুরে সরেজমিন দেখা যায়, প্রতিটি মার্কেটের সামনে স্বয়ংক্রীয় জীবানুনাশক চেম্বার মেশিন বসানো হয়েছে। সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে বাঁশের খুটি ও রশি টানানো হয়েছে। দোকানে প্রবেশের আগে প্রতিটি ক্রেতার শরীরে ছিটানো হচ্ছে জীবানুনাশক স্প্রে। প্রতিটি ক্রেতা-বিক্রেতার মাস্ক ও হ্যান্ড গ্লোভস পরা বাধ্যতামুলক করা হয়েছে।
পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায় বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য প্রচুর পুলিশ মোতায়েন থাকবে। ইউনিফর্ম, সাদা পোশাকে পুলিশ, ট্রাফিক পুলিশ, ডিবি পুলিশ ও ইন্টিলিজেন্স সদস্যরা মাঠে কাজ করবে। সরকারি সিদ্ধান্ত যারা মানবে না তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, সকল স্বাস্থ্যবিধি মানায় রোববার থেকে টাঙ্গাইল শহরের মার্কেট ও শপিং মল খুলে দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন মার্কেট ঘুরে দেখেছি, স্বাস্থ্যবিধি মানা সম্ভব হবে। তাই সকাল ১০টা হতে বিকেল ৪টা পর্যন্ত দোকান খোলার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তবে মার্কেটে সার্বক্ষনিক আইন প্রয়োগকারী সংস্থা কাজ করবে। যদি কোন দোকানে অতিরিক্ত ভীড় দেখা যায় এবং স্বাস্থ্যবিধি না মানা হয় তাহলে আবার মার্কেট বন্ধ করে দেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, সরকারী নির্দেশনায় গত ১০ মে থেকে দোকান, মার্কেট ও শপিংমল খুলে ব্যবসা শুরু করেন টাঙ্গাইলের ব্যবসায়ীরা। খোলার পর থেকেই দোকান, মার্কেট ও শপিংমলগুলোতে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভীড় লক্ষ করা যায়। এতে বিঘিœত হয় স্বাস্থ্যবিধিমালা মেনে চলার বিষয়। পরে টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক গত ১৩ মে বিকেলে এক গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে পরদিন ১৪ মে থেকে দোকান, মার্কেট ও শপিংমলগুলো অর্নিদ্দিষ্ঠকালের জন্য বন্ধ ঘোষনা করেন। এর প্রতিবাদে ব্যবসায়ীরা মানববন্ধন করেন।
জেলা প্রশাসকের কাছে স্বাস্থ্যবিধিমালা মেনে দোকান, মার্কেট ও শপিংমলগুলো খুলে দেয়ার দাবি জানান। জেলা প্রশাসক ব্যবসায়ীদের শতভাগ স্বাস্থ্যবিধিমালা বাস্তবায়নের শর্ত দেন। শর্ত মেনে ব্যবসায়ীরা নিজ উদ্যোগে বিভিন্ন স্থানে জীবানুনাশক ট্যানেল স্থাপন করেন, প্রতিটি মার্কেটের সামনে পানির বেসিন স্থাপন ও ক্রেতা-বিক্রেতাদের সামাজিক দুরত্বের বজায় রাখার জন্য সীমানা নির্ধার করেন।
রোববার (১৭ মে) দুপরে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে একটি টিম দোকান, মার্কেট ও শপিংমলগুলো পরিদর্শন করেন। পরে জেলা প্রশাসক দোকান, মার্কেট ও শপিংমলগুলো খোলার নির্দেশনা দেন।