নিজস্ব প্রতিবেদক : টাঙ্গাইলে বিকাশ থেকে টাকা উত্তোলনের সূত্র ধরে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় বঙ্গবন্ধুসেতু-ঢাকা মহাসড়কে যাত্রীবেশে ডাকাত দলের সর্দারসহ চার সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
বুধবার (৩০ ডিসেম্বর) দুপুরে টাঙ্গাইল পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সিরাজ আমীন এ তথ্য জানান।
গ্রেপ্তারকৃতরা হচ্ছেন, নেত্রকোনা জেলার মোহনগঞ্জ উপজেলার তেতুলিয়া গ্রামের আব্দুল খালেকের ছেলে ডাকাত সর্দার সোহেল রানা (৩৬); ডাকাত দলের সদস্য ভোলা জেলার সদর উপজেলার ইলিশা গ্রামের মৃত দেলোয়ার হোসেনের ছেলে মো. মিজান (৩৩); মানিকগঞ্জ জেলার দৌলতপুর উপজেলার বাসাইল উত্তরপাড়া গ্রামের মৃত সুলতান বেপারীর ছেলে সাবাস (৩২) এবং নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া উপজেলার বান্নানাল গ্রামের মৃত হয়রত আলীর ছেলে রফিকুল ইসলাম (৩২)।
ঢাকার মিরপুর, মানিকগঞ্জ জেলার দৌলতপুর, গাজীপুরের টঙ্গী এলাকার পৃথক পৃথক স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়।
২টি ঘটনার বর্ণনা –
টাঙ্গাইল পিবিআই কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সিরাজ আমীন লিখিত বক্তব্যে জানান, গত সোমবার (২৮ ডিসেম্বর) অভিযোগের ভিত্তিতে তারা জানতে পারেন; বঙ্গবন্ধুসেতু-ঢাকা মহাসড়কে টাঙ্গাইলের করটিয়া বাসস্ট্যান্ড থেকে গত ২২ ডিসেম্বর রাতে একটি প্রাইভেটকারে পাবনা জেলার সাথিয়া উপজেলা সদরের তাঁতিপাড়া এলাকার মো. মিজানুর রহমানের ছেলে মো. মাহতাব হোসেন ১৫০ টাকা ভাড়ায় সিরাজগঞ্জের উদ্দেশে রওয়ানা দেন।
এসময় প্রাইভেটকারের চালক আরও দুই ব্যক্তিকে গাড়িতে তুলে নেন।
মহাসড়কের এলেঙ্গা বাসস্ট্যান্ড পাড় হয়ে নির্জন স্থানে পৌঁছলে গাড়ির ভেতরে থাকা যাত্রীবেশী দুই ডাকাত মাহতাব হোসেনের হাত-পা কাপড় দিয়ে বেঁধে ফেলে।
এরপর তার দেহ তল্লাশী করে দুটি মোবাইল ও নগদ টাকা ছিনিয়ে নেয়।
পরে মাহতাবকে হত্যার হুমকি দিয়ে তার বাবার কাছ থেকে ২৪ হাজার টাকা বিকাশের মাধ্যমে এনে তা ক্যাশআউট করে তাকে কালিয়াকৈর হাইটেক পার্ক এলাকায় ফেলে চলে যায়।
তিনি জানান, টাঙ্গাইলের মহেড়া পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারে কর্মরত পুলিশ পরিদর্শক (ইন্সপেক্টর) মো. বেলাল হোসেনের কাছ থেকে একই কায়দায় নগদ ৪৪ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়।
পরে বিকাশের মাধ্যমে আরও ২০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়ে বেলাল হোসেনকে মহাসড়কের পাশে মির্জাপুরের নির্জন স্থানে ফেলে রেখে চলে যায়।
পুলিশ সুপার জানান, বঙ্গবন্ধুসেতু-ঢাকা মহাসড়কে যাত্রীবেশে প্রায়ই ডাকাতির ঘটনা ঘটলেও ডাকাতরা ছদ্মনাম ও অত্যাধুনিক কৌশল ব্যবহার করায় তাদের নামে কেউ মামলা করার সুযোগ পাচ্ছিল না; তাদেরকে গ্রেপ্তারও করা যাচ্ছিল না।
টাঙ্গাইল সদর ও দেলদুয়ার থানায় দুটি মামলা দায়ের হওয়ার পর বিকাশের সূত্র ধরে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়।
তিনি জানান, ডাকাতদলের চার সদস্যকে গ্রেপ্তারের পর ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত একটি প্রাইভেটকার, লুট করা মোবাইল ও নগদ টাকা উদ্ধার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা দীর্ঘদিন ধরে ঢাকার গাবতলী থেকে পাবনা পর্যন্ত মহাসড়কে ডাকাতি করছিল বলে তারা পুলিশকে জানিয়েছে।