দেড় দশক পর দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বরফ গলছে—আগামীকাল বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ে পাকিস্তানের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক বৈঠকে বসছে বাংলাদেশ। ঢাকায় অনুষ্ঠেয় এই বৈঠকে দুই দেশের স্বার্থসংশ্লিষ্ট নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে বলে আশা প্রকাশ করেছে সরকার।
জাতিসংঘ সম্মেলনের ফাঁকে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফের সঙ্গে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাক্ষাতের মধ্য দিয়ে সম্পর্কের নতুন অধ্যায় শুরু হয়। ওই সময় ড. ইউনূসকে পাকিস্তান সফরের আমন্ত্রণ জানান প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ।
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে ঢাকা-ইসলামাবাদ সম্পর্ক নতুন গতি পেয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১০ সালের পর প্রথমবারের মতো পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, “পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে বাংলাদেশ সবসময় আগ্রহী। বৈঠকে বাংলাদেশের স্বার্থ রক্ষাই আমাদের অগ্রাধিকার।”
বিশ্লেষকরা বলছেন, দীর্ঘদিন পর এই বৈঠক শুরু হওয়াটাই ইতিবাচক। সাবেক রাষ্ট্রদূত মাহফুজুর রহমান বলেন, “১৫ বছর পর দুই দেশের মধ্যে আলোচনা শুরু হওয়াটাই গুরুত্বপূর্ণ। সম্পর্ক পুনর্গঠনের ভিত্তি গড়তে হবে এখান থেকেই।”
বিশ্লেষকদের মতে, স্বাধীনতাযুদ্ধকালীন দায় স্বীকার, আটকে থাকা সম্পদ ফেরত, পাকিস্তানিদের প্রত্যাবাসন ও আনুষ্ঠানিক ক্ষমা চাওয়ার মতো বহু ইস্যু এখনও অনিষ্পন্ন। এসব বিষয় নিয়েও ধাপে ধাপে আলোচনা হবে বলে আশা প্রকাশ করছেন তারা।
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক অধ্যাপক সাহাব এনাম খান বলেন, “আত্মবিশ্বাস ও সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে উঠলে এসব অমীমাংসিত বিষয় সমাধান করাও সহজ হবে।”
এ বৈঠকের পর চলতি মাসের শেষ সপ্তাহে ঢাকায় আসছেন পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার। এটি দুই দেশের উচ্চপর্যায়ে সম্পর্ক উন্নয়নের আরও একটি ধাপ বলে মনে করা হচ্ছে।
বিশ্ব রাজনীতির পালাবদলে ভারত, চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকাও বাংলাদেশের কূটনীতিকে প্রভাবিত করছে। সেই প্রেক্ষাপটে পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক পুনর্গঠন কৌশলগত দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।