বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে প্রত্যাবর্তন নিয়ে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে জোরালো আলোচনা শুরু হয়েছে। দলের শীর্ষ নেতারা দাবি করছেন, তারেক রহমান শিগগিরই দেশে ফিরবেন—তবে তার নির্দিষ্ট দিনক্ষণ এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়নি।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, আগামী আগস্টের শেষ দিকে তার দেশে ফেরার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। বিএনপির একাধিক নেতা জানিয়েছেন, আসন্ন জাতীয় নির্বাচন, দেশের রাজনৈতিক বাস্তবতা ও ব্যক্তিগত নিরাপত্তার বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়েই তারেক রহমানের ফেরার দিন ঠিক করা হবে।
দলের একটি অংশ বলছে, জুলাই-আগস্টের মধ্যে তার প্রত্যাবর্তনের প্রস্তুতি থাকলেও বর্ষাকালে বড় গণ-অভ্যর্থনার আয়োজন বাধাগ্রস্ত হতে পারে। তাই সম্ভাব্য বিকল্প হিসেবে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে বা পরে তাকে দেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়টি গুরুত্ব পাচ্ছে।
ইতোমধ্যেই গুলশানের ১৯৬ নম্বর বাড়িতে তারেক রহমানের থাকার জন্য সংস্কারকাজ চলছে। একসময় এটি ব্রিটিশ-আমেরিকান টোব্যাকোর কাছে ভাড়া দেওয়া ছিল। ধারণা করা হচ্ছে, দেশে ফিরলে সেখানেই তিনি অবস্থান করবেন।
উল্লেখ্য, ২০০৭ সালের ৭ মার্চ এক-এগারো পরিস্থিতিতে তারেক রহমান গ্রেপ্তার হন। পরে জামিনে মুক্তি পেয়ে ২০০৮ সালে চিকিৎসার জন্য লন্ডনে যান এবং দীর্ঘ ১৭ বছর সেখানেই অবস্থান করছেন। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী জানিয়েছেন, তার দেশে ফেরার আর কোনো আইনি বাধা নেই।
বিএনপির শীর্ষ নেতারা ইতোমধ্যেই জানিয়েছেন, দলের পক্ষ থেকে তারেক রহমানকে বরণ করতে সব প্রস্তুতি শেষ। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ‘তারেক সাহেব নিশ্চয়ই দেশে ফিরবেন, অবশ্যই ফিরবেন—শিগগিরই।’ একই ধরনের মন্তব্য করেছেন যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি।
বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত বিশ্লেষকরা মনে করছেন, তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তন মূলত দুটি কৌশলের সঙ্গে জড়িত—একটি হলো নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে ‘রাজকীয়ভাবে’ দেশে ফেরা, অন্যটি সরকারের ওপর রাজনৈতিক চাপ সৃষ্টি করা। লন্ডনে তারেক রহমানের সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের বৈঠকের পর ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের সম্ভাবনার কথাও শোনা যাচ্ছে। সে অনুযায়ী চলতি বছরের শেষ কিংবা আগামী বছরের শুরুতে তার প্রত্যাবর্তনকে বিএনপি কৌশলগতভাবে কার্যকর হিসেবে দেখছে।