বিশেষ প্রতিবেদক : ১৬ জানুয়ারি দ্বিতীয় ধাপের তালিকার অন্যতম টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
এ পৌর নির্বাচনে আ’লীগ, বিএনপি’র দুই প্রার্থী ছাড়াও মাঠে আছেন দুই বিদ্রোহী মেয়র প্রার্থী।
কিন্তু আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে আছেন আ’লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মনিরুজ্জমান বকল।
মূলত এ পৌরসভার ত্রিমুখী নির্বাচনী লড়াইয়ের সম্ভবনা।
চার জন মেয়র প্রার্থী ছাড়াও ৯টি ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২৮ জন ও ৩টি সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ১৩ নারী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
এই পৌরসভায় পুরুষের চেয়ে নারী ভোট বেশি। জয়-পরাজয়ে নারী ভোটাররা ভূমিকা রাখবেন। বিজয়ী হতে নারী ভোট একটা ‘ফ্যাক্টর’ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তাই নারী ভোটারদের ভোট টানতে প্রার্থীদের নানা কৌশল করতে হচ্ছে। এতে ইভিএমএ ভোট হওয়ার বিষয়টি একটু প্রতিবন্ধকতা তৈরি করছে।
তারপরও পছন্দের প্রার্থীদের ভোট দিতে নারীকে সাহস যোগাতে স্থানীয় প্রশাসন ও নির্বাচন সংশ্লিষ্টদের ডামি (মগ ভোট) ভোটের পাশাপাশি প্রার্থী ও তার কর্মীদের চেষ্টা অব্যাহত আছে।
বৃহস্পতিবার (১৪ জানুয়ারি) দিনব্যাপী কেন্দ্রে কেন্দ্রে এ ডামি ভোটের আয়োজন করেছিলেন উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও সহকারী রিটানিং কর্মকর্তা করুণা সিন্ধু চাকলাদার।
নির্বাচন অফিস সূত্র জানায় –
নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, পৌরসভার নয়টি ওয়ার্ডে মোট ৩০ হাজার ৩ জন ভোটার।
এব মধ্যে পুরুষ ভোটার ১৪ হাজার ৪৬৩ এবং নারী ভোটার ১৫ হাজার ৫৪৩। নারী ভোটার ১ হাজার ৮০টি বেশি।
সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে ভোটারদের মধ্যে নানা প্রশ্ন। তবুও সবার প্রত্যাশা সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ পরিবেশে প্রথমবারের মতো ইভিএম’এ ধনবাড়ী পৌরসভায় ভোটটা হোক। আর সুষ্ঠু নিরপেক্ষ ও সুন্দর পরিবেশে ভোট হলে বেশি এ নারী ভোট বিজয়ের একটি অনুসঙ্গ হবে।
বিশিষ্ট ও সাধারণ মানুষের ভাবনা –
উপজেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক ও মানবাধিকারকর্মী জীবন মাহমুদ শক্তি জানান, প্রতিটি ভোটে নারী ভোটাররা ফলাফল নির্ধারণে একটা বড় ফ্যাক্টর।
কিন্তু ভোট প্রদানের সময় নানা প্রতিবন্ধকতায় ওই নারী ভোটারকেই পড়তে হয়।
দেখা যায়, ভোট দেয়ার ক্ষেত্রে নারীকে তার স্বামী-সন্তান কখনো কখনো রাজনৈতিক বা প্রভাবশালীদের নির্দেশনা শুনেও ভোট দেয়ার ঘটনা ঘটে।
৫ নং ওয়ার্ডের হবিপুর গ্রামের ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম জানান, ভোটের সময় সহিংস ঘটনা ঘটলে নারীরাই বেশি আক্রান্ত হয়। প্রভাবমুক্ত নির্বাচন হলে অবশ্যই নির্বাচনী পরিবেশ সুন্দর থাকবে।
তরুণ ভোটার সাইফুল ইসলাম মিলন মন্তব্য করেন, কৌশল হিসেবে এ নারীকে নিয়েই ভোটের মাঠে নামিয়ে নিজের দিকে ভোট টানার চেষ্টা; নারী দিয়ে মিছিল মিটিং করছেন সব প্রার্থীই।
শিক্ষিত ও বয়সে তরুণরা ভোট দিতে সিদ্ধান্ত নিতে পারলেও; গ্রামের অর্ধশিক্ষত, অশিক্ষিত, অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল নারী ভোটাররা ভোট প্রদানের ক্ষেত্রে প্রভাবিত হন বলে একাধিক সচেতন নাগরিক মন্তব্য করেছেন।
ধনবাড়ীর তরুণ প্রতিনিধি রবিউল আলম, শামীম, রাজুসহ অনেকে মনে করেন; ধনবাড়ীর উন্নয়নে যিনি কাজ করবেন, যিনি সৎ, নাগরিক সেবায় উপযুক্ত, প্রতিশ্রুতিশীল দুর্নীতিমুক্ত; তাকেই উন্নত ধনবাড়ী গঠনের জন্য তাকে নির্বাচিত করা উচিত।
তারাও মনে করেন, নারী ভোটার বিজয়ের পদে একটা ফ্যাক্টর। কিন্তু নারীদের ভোট কেন্দ্রে আসা-যাওয়া নিরাপদ করা জরুরী।
ধনবাড়ী পৌরসভা নির্বাচনে নারীর প্রভাবমুক্ত ও নিরাপদ অংশ গ্রহণের সুযোগ দাবি করেছেন সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর প্রার্থীদের। সম্পাদনা – অলক কুমার