মধুপুর প্রতিনিধি : কলা বাগান কেটে ফেলায় ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠির বাসন্তী রেমাকে আর্থিক সহায়তা এবং আবাসনের ব্যবস্থা করার আশ্বাস দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।
এছাড়াও মধুপুর বনে ফসল নষ্ট করে আর জমি উদ্ধারের অভিযান করবে না বন বিভাগ।
স্থানীয় অদিবাসীদের সাথে আলোচনা করে জমি উদ্ধার অভিযান করবে।
বৃহস্পতিবার জেলা প্রশাসন ও বন বিভাগের কর্মকর্তাদের সাথে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর নেতৃবৃন্দের সাথে অনুষ্ঠিত সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
মধুপুরের দোখলা বন বিভাগের রেস্ট হাউজে দুপুরে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় সভাপতিত্বে করেন, টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. জামিরুল ইসলাম।
সভায় উপস্থিত ছিলেন, বিভাগীয় বন কর্মকর্তা জহিরুল ইসলাম, মধুপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সরোয়ার আলম খান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফা জহুরা, মধুপুর সার্কেলের সহকারি পুলিশ সুপার কামরান হোসেন, সহকারি কমিশনার (ভূমি) এম এ করিম।
ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর প্রতিনিধিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বৃহত্তর ময়মনসিংহ আদি উন্নয়ন পরিষদের সভাপতি অজয় এ মৃ, জয়েনশাহী আদিবাসী উন্নয়ন পরিষদের সভাপতি ইউজিন নকরেক।
আরো উপস্থিত ছিলেন, মধুপুর ট্রাইবাল ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি উইলিয়াম দাজেল, সাবেক সাধারণ সম্পাদক হেলিম জেত্রা, বাংলাদেশ গারো ছাত্র সংগঠনের সভাপতি জন জেত্রা, ক্ষতিগ্রস্ত বাসন্তী রেমা প্রমুখ।
সভায় বাসন্তী রেমা জানান, বংশ পরস্পরায় তারা এ জমি চাষবাস করছি। তার নানীর কাছ থেকে তার মা পেয়েছিলেন।
মায়ের কাছ থেকে বাসন্তী ১৯৯৩ সালে এ জমি পান। ঋণ করে ৪০ শতাংশ জমিতে কলা গাছ লাগিয়েছিলেন।
কিন্তু বন বিভাগের লোকজন এ গাছ কেটে ফেলায় তার অনেক ক্ষতি হয়ে গেছে। তিনি ক্ষতি পূরণ দাবি করেন।
সভার সিদ্ধান্ত –
সভায় উভয় পক্ষের আলোচনা শেষে সিদ্ধান্ত হয় ফসল নষ্ট করে বন বিভাগ জমি উদ্ধার অভিযান চালাবে না।
উপজেলা পরিষদ থেকে বাসন্তী রেমাকেও নগদ ২০ হাজার টাকা এবং সরকারের আশ্রায়ন প্রকল্প থেকে তার আবাসনের ব্যবস্থা করা হবে।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. জামিরুল ইসলাম জানান, ভুল বোঝাবুঝি থেকে কলা গাছ কাটার মতো ঘটনা ঘটেছিলো।
পরবর্তীতে যাতে এ ধরনের ঘটনা না ঘটে এজন্য আলোচনায় বসা হয়েছিলো।
সার্বিক পরিস্থিতি –
দুপুরে যখন দোখলা রেস্ট হাউজে আলোচনা চলছিলো তখন এর সামনে অবস্থান নেন কয়েক শ ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠির মানুষ।
তারা বন বিভাগের উচ্ছেদ অভিযানের বিরুদ্ধে প্ল্যাকার্ড, ব্যানার প্রদর্শন করে।
জয়েনশাহী আদিবাসী উন্নয়ন পরিষদের সভাপতি ইউজিন নকরেক জানান, বাসন্তীকে ঘর করে দেওয়াসহ ক্ষতিপূরণ দেয়ার প্রতিশ্রুতি প্রশাসন দিয়েছে।
এছাড়া উচ্ছেদের নামে এভাবে কারো জমির ফসল নষ্ট করবে না বলে বন বিভাগের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ৯ সেপ্টেম্বর বন বিভাগ মধুপুর বনের পেগামারি এলাকায় ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠির বাসন্তী রেমার ৪০ শতাংশ জমির কলা গাছ কেটে সামাজিক বনায়ন করার উদ্যোগ নেয়।
এতে বিক্ষুদ্ধ হয়ে উঠে স্থানীয়রা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও ব্যাপক আলোচনা সমালোচনা হয়। সম্পাদনা – অলক কুমার