বিমানবন্দর থেকেই ডাকাতরা প্রবাসীদের গাড়ি টার্গেট করে। যারা প্রবাস থেকে দেশে ফিরে বিমানবন্দরে নামেন ডাকাতরা তাদের টার্গেট করে পিছু নেয়। পরে সড়কের সুযোগ বুঝে ডাকাতি করে। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে টানা দুই ডাকাতির ঘটনায় জড়িত ডাকাত চক্রের চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত ধারালো অস্ত্র ও বিদেশী মুদ্রা, লুণ্ঠিত মালামাল উদ্ধার করা হয়েছে।
আজ বুধবার (১২ মার্চ) দুপুরে কুমিল্লা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ নাজির আহমেদ খাঁন। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- চাঁদপুর জেলার মনপুরা এলাকার আব্দুল মান্নানের ছেলে আব্দুল হান্নান (৩৫), লক্ষীপুর জেলার চরম মহান এলাকার মৃত সিরাজ মোল্লার ছেলে মো. শরিফ হোসেন (৪৫), কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার জোড়পুকুরিয়া গ্রামের মৃত রমিজ উদ্দিন হাজির ছেলে নজরুল ইসলাম (৬০), একই উপজেলার দোলায় নবাবপুর এলাকার তাজুল ইসলামের ছেলে মোহাম্মদ আলাউদ্দিন (৩৫)। পুলিশ সুপার নাজির আহমেদ খান বলেন, ‘ডাকাতির ঘটনাস্থল পরিদর্শন এবং সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, তিনটি ঘটনায় একই পিকআপ ব্যবহৃত হয়েছে।
এমনকি ঘটনার
সঙ্গে জড়িত ডাকাতরা একই দলের সদস্য। পরবর্তীতে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় এবং গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ডাকাত গ্রেপ্তারে অভিযান পরিচালনা করে চৌদ্দগ্রাম থানা পুলিশ।’ তিনি আরো বলেন, ‘গত কয়েকদিনে বেশ কয়েকবার প্রচেষ্টায় কুমিল্লা জেলার চান্দিনা থানা এলাকা থেকে আলাউদ্দিন ও নজরুল এবং পার্শ্ববর্তী চাঁদপুর জেলার কচুয়া থানার বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করে হান্নান ও শরিফকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় তাদের কাছ থেকে ডাকাতিতে ব্যবহৃত একটি পিকআপ গাড়ি, দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র, লুণ্ঠিত মালামাল, অর্থ ও বৈদেশিক মুদ্রা উদ্ধার করা হয়। ডাকাতদেরকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে- কুমিল্লা, চাঁদপুর, নোয়াখালী ও চট্টগ্রাম জেলার ২০/২৫ জন ডাকাত তিনটি গ্রুপে মহাসড়কে ডাকাতি কার্যক্রম পরিচালনা করে। তারা বিমানবন্দর থেকে বিভিন্ন সোর্সের মাধ্যমে প্রবাসীদের গাড়ী সম্পর্কে তথ্য পায়। মেঘনা টোল প্লাজা থেকে তারা প্রবাসীর গাড়ির পিছু নেয় এবং নির্জন স্থানে পিকআপ দিয়ে গাড়িটিকে ব্যারিকেড দেয়।
তারা মূলত ৬/৭ জনের একটি ডাকাত দল দেশীয় ধারালো অস্ত্রশস্ত্রের মুখে প্রবাসীদের জিম্মি করে তাদের সর্বস্ব ছিনিয়ে নেয়।’ পুলিশ সুপার বলেন, ‘জিজ্ঞাসাবাদে তারা দুই প্রবাসী বহনকারী ২টি গাড়ির গতিরোধ করে ডাকাতির কথা স্বীকার করেছে। এ ছাড়াও তাদের সঙ্গে জড়িত বেশ কয়েকজনের নাম ঠিকানা বলেছে যা তদন্ত স্বার্থে প্রকাশ করা যাচ্ছে না। গত ২৭ ফেব্রুয়ারি ও ১ মার্চ ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের একই স্থানে একই কৌশলে একজন মালয়েশিয়া প্রবাসী ও কুয়েত প্রবাসীর গাড়িতে ডাকাতি হয়। এসব ঘটনায় পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগীরা।