নিজস্ব প্রতিবেদক : টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার এলেঙ্গায় বিরতি রিসোর্ট অ্যান্ড রেস্টুরেণ্টে অনৈতিক কার্যক্রম করায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে তিন খদ্দেরসহ সাত নারীকে আটক করেছে পুলিশ।
৩০ জুন (রোববার) গভীর রাতে অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন রুম থেকে তাদেরকে আটক করা হয়।
জানা যায়, এলেঙ্গার বিরতি রিসোর্ট থেকে গ্রেপ্তারকৃত এই নারীরা বেশ কিছুদিন যাবত টাঙ্গাইলের ২/৩টি হোটেল ও রিসোর্ট দাপিয়ে বেড়াচ্ছে।
আরো পড়ুন – বাসাইলে সরকারি জমি থেকে আ.লীগ নেতাকে উচ্ছেদ
তাদের নিয়ন্ত্রণে থাকা পাবনা ও টাঙ্গাইল জেলার বেশ কিছু যুবতি রিসোর্টসহ শহরের প্রাণকেন্দ্রের ২/১টি অভিজাত হোটেলে নিয়মিত যাতায়াত করে বলে জানিয়েছেন একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র।
সোমবার (১ জুলাই) সকালে এ ঘটনায় মানবপাচার আইনে মামলা দায়ের করে তাদেরকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
কালিহাতী থানার এসআই সাজ্জাদ হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আটককৃতরা হচ্ছেন- পাবনা জেলার ঈশ্বরদী উপজেলার মুলাডুর গ্রামের মৃত আ. করিমের ছেলে মো. মোজাম্মেল (৫৮), টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার ব্রাহ্মণশাসন গ্রামের রিয়াজ উদ্দিনের ছেলে আফজাল হোসেন (৩৫), বগুড়া সদর উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের রেজাউল করিমের ছেলে কনক ইসলাম (৩০), টাঙ্গাইল শহরের বোয়ালী মধ্যপাড়ার মৃত আবু সাঈদের মেয়ে হাফিজা ওরফে হাবিবা (২৫), একই শহরের অলোয়াভবানী এলাকার আ. করিমের মেয়ে শিউলী (২৪), একই জেলার গোপালপুর উপজেলার নরিল্যা গ্রামের আ. কাদেরের মেয়ে কুলসুম (১৯), টাঙ্গাইল শহরের বিশ্বাস বেতকা (সৃষ্টি স্কুল রোড) এলাকার মো. সিদ্দিকুর রহমানের মেয়ে সারিয়া রহমান জাকিয়া (২১), শহরের বটতলার মরহুম ফজলুর রহমানের (ব্রিগেডিয়ার) মেয়ে ফারজানা (৩২), একই জেলার মির্জাপুর উপজেলার কুরণী গ্রামের মৃত কদ্দুছ খানের মেয়ে ঈশা ওরফে শাহনাজ (২৭) এবং যশোর জেলার মনিরামপুর উপজেলার বাঙালিপুর গ্রামের আশরাফ গাজীর মেয়ে মুক্তা (৩০)।
পুলিশের বক্তব্য –
গ্রেপ্তারের সংবাদ পাওয়ার পর নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাসাইল থানায় কর্মরত এক পুলিশ সদস্য বলেন, বিরতি রিসোর্ট থেকে গ্রেপ্তারকৃত পাবনার ওই দালালের তত্ত্বাবধানে টাঙ্গাইল ও পাবনা জেলার অন্তত ১৫ জন নারী রয়েছে।
যারা বাসাইলের একটি রিসোর্টেও নিয়মিত যাতায়াত করে।
আরো পড়ুন – মধুপুরে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর নারীকে ধর্ষণ চেষ্টা। থানায় অভিযোগ
তিনি আরো জানান, কয়েকদিন আগেও বাসাইলের ওই রিসোর্টটিতে তারা টানা ৬/৭ দিন অবস্থান করেছে।
কিন্তু ওই রিসোর্টের মালিক অনেক প্রভাবশালী বিধায় সেখানে অভিযান পরিচালনা করা যায়নি বলেও জানান ওই পুলিশ কর্মকর্তা।
কালিহাতী থানায় কর্মরত পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) সাজ্জাদ হোসেন জানান, রোববার গভীর রাতে গোপনে অসামাজিক কার্যকলাপের সংবাদ পেয়ে এলেঙ্গার বিরতি রিসোর্টে অভিযান পরিচালনা করা হয়।
এসময় ওই রিসোর্ট থেকে নারী পুরুষসহ ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এ সময় বিরতি রিসোর্টের মোসলেম উদ্দিন (৫৫), ফাহাদ (৩৫) ও সিরাজুল (৩৫) সহ আরও ৩-৪ জন দৌঁড়ে পালিয়ে যায়।
গ্রেপ্তারের বিষয়ে কালিহাতী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কামরুল ফারুক জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এসআই সাজ্জাদ হোসেন অভিযান পরিচালনা করে।
এসময় তিন খদ্দেরসহ সাত নারীকে আটক করা হয়।
পরে পুলিশ বাদি হয়ে ১৩ জনের নামে মানবপাচার আইনের ১২/১৩ ধারায় মামলা দায়ের করেছেন।
গ্রেপ্তারকৃতদের রোববার দুপুরে আদালতে পাঠানো হয়েছে। অন্যদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান চলছে।