ময়মনসিংহের নান্দাইল চৌরাস্থা এলাকায় ময়লার ভাগাড়ের পাশেই পশু জবাই ও মাংস বিক্রির অস্বাস্থ্যকর চিত্র দেখা গেছে। দিনের আলো ফোটার আগেই শুরু হয় গরু ও খাসি জবাইয়ের কাজ। জবাইকৃত পশুর রক্ত ও অপাচ্য অংশ ময়লার ভাগাড়ে ফেলা হয়, যা পাশেই মুত্রত্যাগের স্থান। এভাবে আইন ও স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে প্রতিদিন ৫ থেকে ১০টি পশু জবাই করা হচ্ছে।
চৌরাস্থা বাসস্ট্যান্ডের পাশে দুটি মাংসের দোকানে প্রতিযোগিতামূলকভাবে মাইকে প্রচার চালিয়ে মাংস বিক্রি করা হয়। প্রতি কেজি মাংস বিক্রি হয় ৭০০ টাকায়। এলাকাটি ঈশ্বরগঞ্জ, কেন্দুয়া, তাড়াইল ও কিশোরগঞ্জের যোগাযোগকেন্দ্র হওয়ায় বিপুল সংখ্যক ভোক্তার চাহিদা মেটানো হয় এখান থেকে। তবে পশু জবাইয়ের আগে বা পরে কোনো ভেটেরিনারি পরীক্ষা করা হয় না, যা স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়াচ্ছে।
পশু জবাই ও মাংসের মান নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১১ অনুযায়ী, জবাইয়ের আগে ও পরে পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা বাধ্যতামূলক। কিন্তু স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, ভোরে জবাইয়ের সময় ভেটেরিনারি সার্জন উপস্থিত থাকেন না। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পশু জবাইয়ের ২৪ ঘণ্টা আগে ‘এন্টিমর্টেম এক্সামিনেশন’ এবং জবাইয়ের পর ‘পোস্টমর্টেম এক্সামিনেশন’ করা জরুরি। কিন্তু এ নিয়ম মানা হচ্ছে না।
নান্দাইল উপজেলা স্যানিটারী ইন্সপেক্টর মো. মিজানুর রহমান বলেন, আমরা শুধু পরিবেশগত দিক দেখি। পশু জবাই ও মাংসের মান প্রাণী সম্পদ অফিসের দায়িত্ব। তবে অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে মাংস বিক্রি বন্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অন্যদিকে, উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. আবু সাদাদ মোহাম্মদ সায়েম বলেন, এ ব্যাপারে আগে কিছুটা শিথিলতা ছিল। এখন থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং এক জায়গায় জবাইয়ের ব্যবস্থা করার চেষ্টা করা হবে।
এ অবস্থায় স্থানীয় ভোক্তারা অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে জবাই করা মাংস কিনতে বাধ্য হচ্ছেন, যা তাদের স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি করছে।