মির্জাপুর প্রতিনিধি : ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের মির্জাপুরে বিকল হয়ে রাস্তায় পাশে দাঁড়িয়ে থাকা যাত্রীবাহী বাসকে সবজিবাহী ট্রাক ধাক্কা দিলে ৬ জন নিহত কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছেন।
নিহতদের মধ্যে পাঁচজন রংপুরের ও একজন রাজশাহীর। রংপুরের চারজন হলেন, পিরোজপুর উপজেলার জাহাঙ্গীরবাগ এলাকার রওশন আলী স্ত্রী মোছা. রেশমী, কদরপাড়া এলাকার রিপন মিয়ার স্ত্রী চন্দনা, হরিরাম শাহপুর এলাকার মো. এমদাদুল ইসলামের ছেলে মো. রাশিদুল ইসলাম (৩০), পীরগঞ্জ উপজেলার ধললাকান্দি এলাকার জয়নাল হোসেনের ছেলে মো. আশরাফুল ইসলাম (৩৫), একই গ্রামের পঙ্কজ আলীর ছেলে মো. রিয়াজুল ইসলাম (৩১) ও রাজশাহীর বোয়ালিয়া উপজেলার মতিয়াবিল এলাকার জালাল উদ্দিনের ছেলে মো. হৃদয় (২০)।
শুক্রবার সকাল সাতটার দিকে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে উপজেলার কুর্ণী এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, ওই স্থানে ঢাকাগামী সেবা ক্লাসিক পরিবহনের যাত্রীবাহী একটি বাসের বিকল চাকা চালকের সহকারীরা মেরামত করছিলেন।
এ সময় যাত্রীদের অনেকে বাস থেকে নিচে নেমে দাঁড়িয়েছিলেন।
এসময় হঠাৎ থেমে থাকা বাসটিকে পেছন থেকে সবজি বোঝাই একটি ট্রাক ধাক্কা দেয়।
এতে বাসের সামনের অংশ রাস্তার পাশের একটি ঘরের দেয়াল ভেঙে ভেতরে ঢুকে যায় এবং
ট্রাকের সামনের অংশ বাসের পেছনে ধাক্কা লাগলে বাসের পেছন ও ট্রাকের সামনের অংশ দুমড়েমুচড়ে যায়।
ফলে ঘটনাস্থলেই নারীসহ বাসের চার যাত্রী নিহত হন। আহত মানুষের আর্তচিৎকারে আশপাশের লোকজন ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। খবর পেয়ে মির্জাপুর থানা, গোড়াই হাইওয়ে থানা, ট্রাফিক পুলিশ ও মির্জাপুর ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা উদ্ধার কাজে অংশ নেন।
মহাসড়কের পাশের বাড়ির ঘরে নাতি নয়ন মিয়াকে (১১) নিয়ে বিছানায় শুয়ে ছিলেন বিধবা শান্তি বেগম।
তিনি জানান, হঠাৎ ঘরে তিনি বিকট শব্দ শুনতে পান। মুহূর্তের মধ্যে তাদের খাটের ওপর ইট-বালু পড়তে থাকে।
বিছানাটি ভাঙা দেওয়াল থেকে দূরে ছিল। এ জন্য তারা বেঁচে গেলেও ঘরে থাকা টেলিভিশন, আলমারিসহ মূল্যবান অনেক জিনিসপত্র ভেঙে নষ্ট হয়ে গেছে।
ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশের বক্তব্য –
মির্জাপুর ফায়ার স্টেশনের স্টেশন অফিসার সুশান্ত কুমার দে মন্ডল বলেন, সংবাদ পেয়ে আমরা দ্রুত ঘটনাস্থলে যাই।
এরপর সেখান থেকে চারটি লাশ উদ্ধার করি। আহতদের কুমুদিনী হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়।
মির্জাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সায়েদুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ঘটনার পর পর মির্জাপুর ফায়ার সার্ভিসের সহযোগিতায় আহত ও নিহতের উদ্ধার করা হয়।
আহতদের চিকিৎসার জন্য দ্রুত হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
আইনি প্রক্রিয়া শেষ করে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তরের চেষ্টা চলছে।