টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার গোড়াই ভূমি অফিস অনিয়ম আর ঘুষ বাণিজ্যের আখড়ায় পরিণত হয়েছে—এমন অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয়রা। জমি খারিজ ও নামজারি করতে গিয়ে দিনের পর দিন হয়রানি আর মোটা অঙ্কের ঘুষ দিতে বাধ্য হচ্ছেন সাধারণ মানুষ।
ভুক্তভোগীরা জানান, অফিসে পদে পদে ঘুষ না দিলে কোনো ফাইলই এগোয় না। সরকারি নিয়মে ৪৫ দিনের মধ্যে জমি খারিজের নিয়ম থাকলেও এখানে ৫-৬ মাসেও কাজ হয় না। খারিজের জন্য দফায় দফায় ঘুরতে হয়, শেষমেশ মোটা অঙ্কের টাকা না দিলে ফাইল পড়ে থাকে ধুলোয়।
স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুস সাত্তার জানান, গোড়াই মৌজার ৬৫ শতক জমি খারিজের জন্য গেলে ১৩ শতক জমির দাগ নিয়ে অজুহাত তুলে তাকে ছয়দিন ঘুরিয়েছেন উপ-সহকারী ভূমি কর্মকর্তা আমিনুল হক। ঘুষ না দেওয়ায় খারিজের আবেদনই গ্রহণ করা হয়নি বলে অভিযোগ করেন তিনি।
এমন অভিযোগ করেছেন আরেক ভুক্তভোগী সৌরভ হোসেনও। তার জমির শ্রেণী ‘গড়মিল’ দেখিয়ে এক লাখ টাকা ঘুষে নামজারি করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে। একইভাবে উত্তরপাড়া গ্রামের আব্দুল মালেক জানিয়েছেন, ছোট ভাইয়ের জমি খারিজের জন্য নায়েব সরাসরি ১৫ হাজার টাকা নেন, কারণ জানতে চাইলে ‘আপনার জানার দরকার নেই’ বলে সাফ জানিয়ে দেন।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, এ অফিসে দালালচক্রও সক্রিয়। দালালদের হাত ধরেই চলে ঘুষ লেনদেন। অফিসের ভেতরে কোনো কাজই নিয়মমতো হয় না—সবই হয় ‘অফ দ্য রেকর্ড’।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে উপ-সহকারী ভূমি কর্মকর্তা আমিনুল হক বলেন, ‘জমির শ্রেণী গড়মিল কোনো সমস্যা নয়। আইন অনুযায়ী না হলেও এসিল্যান্ড স্যার চাইলে নামজারি করে দিতে পারেন।’ তবে কারো কাছ থেকে টাকা নেওয়ার বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেন এবং সংবাদ না করার ‘পরামর্শ’ দেন।
এদিকে এ বিষয়ে স্থানীয়রা শিগগিরই দুর্নীতি দমন কমিশনসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।