নিজস্ব প্রতিবেদক : মামলার তদন্ত কর্মকর্তা অশোক কুমার সিংহ জানান, যানজটে আটকে পরার খবর তিনি রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীদের জানিয়েছিলেন।
দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তিনি আদালতে হাজিরা দেন।
কিন্তু তার আগেই মামলাটির কার্যক্রম শেষ হয়।
তিনি আরো জানান, এর আগে চারবার তিনি সাক্ষ্য দেয়ার জন্য আদালতে হাজির হয়েছিলেন।
কিন্তু আসামি অসুস্থ থাকায় কারাগার থেকে হাজির না করাসহ বিভিন্ন কারণে তার সাক্ষ্য গ্রহণ হয়নি।
তদন্ত কর্মকর্তার যানজটে আটকে পরে পথে হয়েছে দেরি হওয়ায় সময়মতো আদালতে হাজির হতে পারেননি।
তাই আজও হয়নি টাঙ্গাইলের বহুল আলোচিত আওয়ামী লীগ নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমেদ হত্যা মামলার সর্বশেষ সাক্ষি তদন্তকারী কর্মকর্তার সাক্ষ্য গ্রহণ।
এর মধ্য দিয়ে ১৬ বারের মতো পেছালো চাঞ্চল্যকর এই হত্যা মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ।
টাঙ্গাইলের প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে বিচারক মো. মাহমুদুল হাসান আগামি ২২ জুলাই তদন্ত কর্মকর্তার সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য্য করেছেন।
পিপি জানান –
টাঙ্গাইলের সরকারি কৌশুলী (পিপি) এস আকবর খান জানান, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা টাঙ্গাইল জেলা গোয়েন্দা পুলিশের সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অশোক কুমার সিংহ অবসরে গেছেন।
তিনি গাইবান্ধায় নিজ বাড়িতে অবস্থান করেন।
রোববার ভোরে তিনি সাক্ষ্য প্রদানের জন্য টাঙ্গাইলের উদ্দেশ্যে রওনা হন।
কিন্তু পথে বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, বঙ্গবন্ধু সেতুসহ বিভিন্ন স্থানে যানজটে আটকা পড়েন।
এজন্য তিনি সময়মতো আদালতে হাজির হতে পারেন নি।
তাই তার সাক্ষ্য গ্রহণ হয়নি। তবে তিনি বিলম্বে আদালতে আসার পরেও তার হাজিরা দেয়া হয়েছে।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী –
মামলার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মনিরুল ইসলাম খান জানান, কারাগারে থাকা সব আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়েছিল।
মামলার প্রধান আসামি টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনের সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান ওরফে রানা হজ্ব পালনের জন্য সৌদি আরবে থাকায় উপস্থিত ছিলেন না।
কারাগারে থাকা তার ছোটভাই টাঙ্গাইল পৌরসভার সাবেক মেয়র সহিদুর রহমান খান ওরফে মুক্তির জামিনের জন্য তার আইনজীবীরা আবেদন জানান। আদালত জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন।
প্রসঙ্গত, “অসুস্থ” থাকায় কারাগার থেকে আসামি আদালতে আনা হয়নি।
অথবা তদন্তকারী কর্মকর্তা হাজির হননি এই কারণে এর আগে ১৫ বার সাক্ষ্য গ্রহণে তারিখ পিছিয়েছে।
ঘটনাক্রম –
মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি টাঙ্গাইল শহরের কলেজ পাড়া এলাকায় নিজ বাড়ির কাছ থেকে জেলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন সদস্য ফারুক আহমেদের গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করা হয়।
তিনদিন পর তার স্ত্রী নাহার আহমেদ বাদি হয়ে টাঙ্গাইল সদর থানায় মামলা দায়ের করেন।
মামলায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামী করা হয়।
২০১৪ সালে এই মামলায় জড়িত থাকা সন্দেহে আনিছুল ইসলাম ওরফে রাজা এবং মোহাম্মদ আলী নামের দুই জনকে গোয়েন্দা পুলিশ গ্রেপ্তার করে।
তাদের আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিতে এই হত্যা মামলার সঙ্গে টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনের সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানা, তার অপর তিন ভাই টাঙ্গাইল পৌরসভার তৎকালীন মেয়র সহিদুর রহমান খান ওরফে মুক্তি, ব্যবসায়ী নেতা জাহিদুর রহমান খান ওরফে কাকন এবং কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের তৎকালীন সহ-সভাপতি সানিয়াত খান ওরফে বাপ্পা’র জড়িত থাকার বিষয়টি বের হয়ে আসে।
তদন্ত শেষে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ ২০১৬ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়।
এতে সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান’রা চার ভাইসহ ১৪ জনকে আসামী করা হয়।
২০১৭ সালের ৬ সেপ্টেম্বর আসামীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। এরমধ্য দিয়েই বিচার কাজ শুরু হয়।