অনিদ্রা, রাতে ঘুম ভাঙা বা দিনের মধ্যে অতিরিক্ত ঘুম ভাবনার কারণ হিসেবে সাধারণত মানসিক চাপ, ক্যাফেইন বা মোবাইল স্ক্রিনকে দায়ী করা হয়। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের মতে, শরীরে কিছু গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিন ও খনিজের ঘাটতিও ঘুমের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। এসব পুষ্টি উপাদান না থাকলে ঘুম নিয়ন্ত্রণকারী হরমোন ও নিউরোট্রান্সমিটার সঠিকভাবে কাজ করে না।
ভিটামিন ও খনিজ যা ঘুমের জন্য গুরুত্বপূর্ণ:
১. ভিটামিন ডি – শরীরের ঘড়ি ঠিক রাখে
শুধু হাড় নয়, ভিটামিন ডি ঘুম-জাগরণ চক্র ঠিক রাখে। এর অভাবে ঘুম কম হয়, রাতের মাঝরাতে ঘুম ভেঙে যায় এবং দিনে অতিরিক্ত ঘুম আসে। স্লিপ অ্যাপনিয়া হতে পারে। প্রতিদিন ১৫-২০ মিনিট রোদে থাকা, ডিম, স্যামন মাছ ও ফোর্টিফাইড দুধ খাওয়া উপকারী। প্রয়োজনে ডাক্তারের পরামর্শে সাপ্লিমেন্ট নিন।
২. ভিটামিন বি – ঘুমের হরমোন তৈরিতে সাহায্য করে
বি-৬, বি-১২ ও ফোলেট (বি-৯) ঘুমের হরমোন মেলাটোনিন উৎপাদনে সহায়ক। এর অভাবে ঘুম কম হয়, রাতে স্বপ্ন বেশি আসে এবং দিনে ঝিমুনি লাগে। ডাল, শাকসবজি, ডিম, মাছ ও গোটা শস্য খাওয়া উচিত। নিরামিষাশীরা বি-১২ সাপ্লিমেন্ট নিতে পারেন।
৩. ভিটামিন সি – স্ট্রেস কমায়, ঘুম বাড়ায়
ভিটামিন সি স্ট্রেস কমিয়ে ঘুমের মান উন্নত করে। কমলালেবু, মরিচ, স্ট্রবেরি, কিউই ও ব্রকলি নিয়মিত খাওয়া উপকারী।
৪. ভিটামিন ই – মস্তিষ্ককে শান্ত রাখে
মস্তিষ্কের কোষ রক্ষা করে ও হরমোন ভারসাম্য ঠিক রাখে। এর ঘাটতি থাকলে স্লিপ অ্যাপনিয়া সমস্যা বাড়তে পারে। বাদাম, বীজ ও জলপাই তেল ব্যবহার করুন।
৫. ম্যাগনেসিয়াম – ঘুমের জন্য গুরুত্বপূর্ণ খনিজ
মস্তিষ্ক ও নার্ভ সিস্টেমকে শান্ত রাখে। এর অভাবে অনিদ্রা, উদ্বেগ ও পেশির খিঁচুনি হতে পারে। পালং শাক, কুমড়ার বীজ, ডার্ক চকোলেট ও গোটা শস্য খাওয়া ভালো।
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী, নিয়মিত ঘুমের চেষ্টা করেও যদি ঘুম ঠিক না হয়, তবে ভিটামিন ডি, বি-১২, ফোলেট ও ম্যাগনেসিয়ামের মাত্রা পরীক্ষা করা উচিত। সঠিক মাত্রার পুষ্টি উপাদান থাকলে ঘুম গভীর হয়, সকালে সতেজ অনুভূত হয় এবং সারাদিনের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।