চান্দ্রবর্ষের ইসলামি আরবি সপ্তম মাস হলো রজব। এ মাসের পূর্ণ নাম আর রজবুল মুরাজ্জাব। রজব অর্থ সম্ভ্রান্ত, প্রাচুর্যময়, মহান। মুরাজ্জাব অর্থ সম্মানিত। আর রজবুল মুরাজ্জাব মানে হলো প্রাচুর্যময় সম্মানিত মাস। রজবের পর শাবান মাস, তারপরই রমজান মাস।
পবিত্র সিয়াম সাধনার বিশেষ গুরুত্বের কথা বিবেচনা করে দুই মাস আগে রজব থেকেই এর মানসিক প্রস্তুতি গ্রহণ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রিয় নবী (সা.) প্রতিবছর রজব মাস এলেই রমজানুল মোবারকের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করতেন। তার ইবাদত-বন্দেগি সব কিছুতেই একটি পরিবর্তন সূচিত হতো। রজব সংক্রান্ত একটি হাদিসে আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত রয়েছে, যখন রজব মাস শুরু হতো, নবিজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এ দোয়াটি পড়তেন,
اللَّهُمَّ بَارِكْ لَنَا فِي رَجَبٍ وَشَعْبَانَ وَبلغنا رَمَضَانَ
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা বারিক লানা ফি রজাবা ওয়া শা’বান ওয়া বাল্লিগনা রমাদান।
অর্থ: হে আল্লাহ! আমাদের জন্য রজব ও শাবান মাসকে বরকতময় করুন এবং আমাদের রমজান মাস পর্যন্ত হায়াত দিন। (আল-মু’জামুল আওসাত: ৩৯৩৯)
রজব মাসে নবিজিকে (সা.) অনুসরণ করে আমরাও এ দোয়াটি বেশি বেশি পড়তে পারি। পাশাপাশি রমজানের প্রস্তুতি হিসেবে নফল রোজা, নামাজ ও দান-সদকা বাড়িয়ে দিতে পারি।
রজব ইসলামে সম্মানিত মাস। আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে যে ৪টি মাসকে ‘আশহুরে হুরুম’ বা সম্মানিত মাস ঘোষণা করেছেন রজব মাস সেগুলোর অন্যতম। আল্লাহ তাআলা বলেন, নিশ্চয়ই আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টির দিন থেকে আল্লাহর বিধানে মাস বারটি। এর মধ্যে চারটি মাস বিশেষভাবে হচ্ছে সম্মানিত। এটাই হচ্ছে সুপ্রতিষ্ঠিত ধর্ম। (সুরা তওবা: ৩৬)
বিদায় হজের সময় মিনা প্রান্তরে প্রদত্ত ভাষণে আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সম্মানিত মাসগুলোকে চিহ্নিত করে বলেন, তিনটি মাস হলো ধারাবাহিক— জিলকদ, জিলহজ ও মহররম, অপরটি হলো রজব। (সহিহ বুখারি: ৩১৯৭, সহিহ মুসলিম: ১৬৭৯)
ইমাম আবু বকর জাসসাস (রহ.)-বলেন, এসব মাসে ইবাদতের প্রতি যত্নবান হলে বাকি মাসগুলোতে ইবাদত করা সহজ হয়। আর এ মাসগুলোয় গুনাহ থেকে বেঁচে থাকলে অন্য মাসেও গুনাহ থেকে বেঁচে থাকা সহজ হয়। (আহকামুল কুরআন লিল জাসসাস: ৩/১১১) তাই সম্মানিত মাসসমূহের অন্যতম রজব মাসের মর্যাদা রক্ষায় সবাইকে যত্মবান হতে হবে।