ভারতের প্রতিবেশী নেপালে সহিংস বিক্ষোভের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা অলি পদত্যাগ করেছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিষিদ্ধের প্রতিবাদে ছড়িয়ে পড়া আন্দোলনে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে ২০ জনেরও বেশি নিহত হওয়া এবং পার্লামেন্টে হামলা ও রাজনীতিবিদদের বাড়িতে আগুন ধরানোর ঘটনায় সেনাবাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেমেছে। দেশব্যাপী কারফিউ জারি করা হয়েছে।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নেপালের এই অস্থির পরিস্থিতি ভারতের জন্য উদ্বেগের কারণ, কারণ নেপালের সঙ্গে ভারতের ১,৭৫০ কিলোমিটার খোলা সীমান্ত রয়েছে। এই সীমান্ত উত্তরাখণ্ড, উত্তরপ্রদেশ, সিকিম, বিহার ও পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে যুক্ত।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি জানান, “নেপালের সহিংসতা হৃদয়বিদারক। তরুণদের প্রাণহানি আমাকে ব্যথিত করেছে। নেপালের স্থিতিশীলতা, শান্তি ও সমৃদ্ধি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।” তিনি মন্ত্রিসভার সঙ্গে জরুরি বৈঠকও করেন।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, নেপালের অস্থিতিশীলতা ভারতের কৌশলগত অবস্থান ও নিরাপত্তার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। বিশেষ করে চীনের পশ্চিমাঞ্চলীয় সামরিক কমান্ড নেপালের সীমানার কাছে অবস্থান করছে। ইন্দো-গাঙ্গেয় সমভূমিতে প্রবেশের পথও নেপালের ভেতর দিয়ে গেছে।
ভারতের সঙ্গে নেপালের সম্পর্ক ঐতিহাসিক, কৌশলগত ও অর্থনৈতিকভাবে শক্ত। নেপাল ও ভারতের বার্ষিক দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ৮.৫ বিলিয়ন ডলারের বেশি। এছাড়া ভারতের আনুমানিক ৩৫ লাখ নেপালি কাজ বা বসবাস করছেন।
বিশ্লেষকরা বলছেন, নতুন নেপালি সরকার কী হবে তা স্পষ্ট নয়। ভারতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হবে কূটনৈতিক পদক্ষেপ নেওয়া, যাতে প্রতিবেশী দেশে অস্থিতিশীলতা বাংলাদেশের বা শ্রীলঙ্কার মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি না করে।
বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, ভারতের স্থিতিশীলতার জন্য নেপালের রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং চীনের প্রভাবকে মনোযোগ দিয়ে পর্যবেক্ষণ করা অপরিহার্য।