সখীপুরে লেবুচাষীদের হাসিভরা মুখ

সখীপুর প্রতিনিধি : একদিকে করোনা অন্যদিকে রমজান। সব মিলিয়ে সখীপুরে লেবুচাষিদের মুখে হাসি ফুটে ওঠেছে।

সখীপুরে লেবু চাষ করে শতাধিক কৃষক স্বাবলম্বী হয়ে ওঠেছে।

লেবুতে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন “সি”; যা লেবু রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। একদিকে করোনা থেকে রক্ষা ও অন্যদিকে রমজান মাস।

এসব কারণে হুট করে বাজারে লেবুর চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় সখীপুরে শতাধিক লেবু চাষি এ মৌসুমে লেবু বিক্রি করে অনেক টাকা আয় করেছেন।

ফলে, করোনাকালে সাধারণ মানুষদের মধ্যে হাসি না থাকলেও লেবু চাষিদের মুখে বিন্দু পরিমাণ হলেও হাসি ফুটে ওঠেছে।

সখীপুর উপজেলা কৃষি কার্যালয় সূত্র অনুযায়ী জানা যায়, সখীপুরে এবার ১৩০ হেক্টর জমিতে লেবুর চাষ হয়েছে।

উপজেলার শতাধিক ব্যক্তি বানিজ্যিকভাবে লেবু চাষ করেছেন। উপজেলার গজারিয়া, কাকড়াজান, বহুরিয়া, হাতীবান্ধা, যাদবপুর, দাড়িয়াপুর ও কালিয়া ইউনিয়নে লেবু চাষ বেশি হয়েছে।

গজারিয়া গ্রামের মোসলেম, কালিয়ানপাড়ার মারফত আলী, আবদুস সামাদ, জামাল উদ্দিন, শামীম আল মামুন, আলাল উদ্দিন, গিয়াস উদ্দিন, বোখারী, শামসু, জাহাঙ্গীর আলম, রফিকুল ইসলাম, কচুয়া গ্রামের মাইনুল ইসলাম, মহানন্দপুর গ্রামের আবদুল মতিন উল্লেখ্যযোগ্য লেবুচাষি।

চাষীদের কথা –

সখীপুর উপজেলার গজারিয়া গ্রামের লেবু চাষি মোসলেম উদ্দিন বলেন, তিনি চার একর জমিতে লেবু চাষ করেছেন।

এক একরে সাধারণত ৩০০ থেকে ৩৫০টি চারা রোপন করা হয়। খরচ পড়ে একর প্রতি ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকা। রোপন করার তিন বছর পর সাধারণত লেবু বিক্রি শুরু হয়।

এবার মার্চ মাসে প্রতি বস্তা লেবু (১২০ কেজি) পাইকারি বিক্রি হয়েছে ৯ থেকে ১০ হাজার টাকা; খুচরা বিক্রি হয়েছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা হালি।

এপ্রিল মাসে লেবুর দাম খানিকটা কমে গেছে। এখন বস্তা প্রতি বিক্রি হচ্ছে পাঁচ থেকে ছয় হাজার টাকা; খুচরা বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ২৫ টাকা হালি।

মোসলেম উদ্দিন আরও বলেন, তিনি এবার ১০ লাখ টাকার লেবু বিক্রি করেছেন; আগামী এক মাসে আরও পাঁচ লাখ টাকা বিক্রি করবেন বলে আশা করছেন।

উপজেলার কালিয়ানপাড়া গ্রামের লেবু চাষি মারফত আলী দুই একর জমিতে বানিজ্যিকভাবে লেবু চাষ করেছেন। তার তিনটি বাগান।

চার বছর ধরে তিনি লেবু বিক্রি করছেন; দুই বছর আগে তেমন দাম পাননি। গতবছর ও এবার করোনাভাইরাস ও রমজানের কারণে লেবুর চাহিদা বাড়ায় এবারও পাঁচ লাখ টাকার লেবু বিক্রি করেছেন।

মারফত আলী বলেন, করোনাভাইরাস ও রমজান আমাদের আর্শিবাদ হিসেবে এসেছে। এ ভাইরাসের কারণে লেবু বিক্রিতে দ্বিগুণ মূল্য পেয়েছি।

এছাড়াও লেবুর কলম করে চারা বিক্রি করেও প্রচুর আয় করেছি। এবার তিনি ১২ হাজার কলমের চারা বিক্রি করেছেন।

কলমের চারা থেকেও তিনি দুই লাখ ৪০ হাজার টাকা পেয়েছেন।

কচুয়া গ্রামের মাইনুল ইসলাম, তিনি তিন বছর ধরে উপজেলার কচুয়া এলাকায় পাকা সড়কের ধারে দেড় একর জমিতে লেবু চাষ করেছেন। এবার খরচ বাদে তিনি দেড় লাখ টাকা আয় করেছেন।

তিনি বলেন, এ বছর ফলন বেশি হওয়ায় ও বেশি দাম পাওয়ায় চাষিদের মুখে হাসি ফুটেছে। সম্পাদনা – অলক কুমার