সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি : ২০২১-২২ অর্থ বছরে সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলায় কৃষি খাতে বরাদ্দকৃত কৃষি প্রণোদনা ও প্রশিক্ষণে ব্যাপক দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে সদ্যপ্রাপ্ত বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরষ্কারপ্রাপ্ত ও উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রুস্তম আলী এবং উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা ইমরান হোসেনের নামে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, রুস্তম আলী ও ইমরান হোসেনের যোগসাজশে প্রশিক্ষণ ও প্রণোদনার ভুয়া তালিকা বানিয়ে তুলে নেয়া হয়েছে টাকা, বীজ, সারসহ অন্যান্য উপকরণ।
আরো পড়ুন – টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের নার্সদের দুই ঘণ্টা কর্মবিরতি
চরাঞ্চলে কৃষির মান উন্নয়নের জন্য ২০২১-২২ অর্থবছরে ১) রাজস্ব অর্থায়নে প্রদর্শনী বাস্তবায়ন; ২) এনএটিপি; ৩) রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন প্রকল্প; ৪) ধান-গম-পাট বীজ উৎপাদন, বিতরণ ও সংরক্ষণ; ৫) ডাল-তেল-মসলা উৎপাদন, বিতরণ ও সংরক্ষণ; ৬) খামার যান্ত্রিক করণ; ৭) পতিত ও ঘড়ের আঙিনায় সবজি/পুষ্টি বাগানের ৭ টি প্রকল্পের আওতায় উচ্চ ফলনশীল জাতের ধান, পাট, সরিষা, ভুট্টা, মাসকলাই, বাদাম ও বীজসহ অন্যান্য ফসলের প্রযুক্তি প্রদর্শনী স্থাপন ও প্রান্তিক কৃষকদের প্রশিক্ষণের জন্য জেলার অধিকাংশ বরাদ্দ দেয়া হয় চরাঞ্চলে ।
কিন্তু এবারে সদর উপজেলার কিছু এলাকায় প্রশিক্ষন ও সার-বীজ দেয়া হলেও সদর উপজেলার আওতাধীন যমুনার চরের মেছড়া, রুপসা, কাওয়াখোলা সহ বেশ কয়েকটি চরে নয়-ছয় করে ভুয়া তালিকা বানিয়ে টাকা, সার ও বিভিন্ন প্রকার বীজ আত্মসাৎ করেছে সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রুস্তম আলী ও মেছড়া উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা ইমরান হোসেন।
ভূক্তভোগীদের কথা :
এ বিষয়ে তালিকায় থাকা নাসির উদ্দীন, আলতাব হোসেন, হাসিনা খাতুন সহ বেশ কয়েকজন কৃষকের সাথে কথা বললে তারা জানান, তালিকায় নাম থাকার বিষয়ে কিছুই জানেন না তারা।
আরো পড়ুন – টাঙ্গাইলে হঠাৎ সাংবাদিকদের কাছে কদর বেড়েছে বিএনপির
এমনকি বিগত কয়েক বছরের মধ্যেও পাননি কোন কৃষি প্রশিক্ষণ বা কৃষি প্রণোদনা।
কৃষকরা আক্ষেপ করে আরো বলেন, প্রান্তিক চর হাওয়ায় কৃষি কর্মকর্তারা আসেন না এদিকে; তাই সরকারি সুযোগ-সুবিধাসহ নানা পরামর্শ থেকে বঞ্চিত হন তারা।
তাই সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে এসকল ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের জোর দাবি জানান তারা।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বক্তব্য :
সদর উপজেলার মেছড়া ইউনিয়নের তিনটি ব্লকে তিন জন দায়িত্ব থাকার কথা থাকলেও সদর উপজেলা কৃষি কমর্কর্তার যোগসাজশে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা ইমরান হোসেন মেছড়া তিনটি ব্লকের তিনজনের দায়িত্ব তিনি একাই পালন করেন এবং সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাকে সাথে নিয়ে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন বরাদ্দকৃত সার বীজ ও প্রনোদনা প্রশিক্ষণের টাকা আত্মসাৎ করে।
এবিষয়ে কৃষি কর্মকর্তা ইমরান হোসেনের সাথে কথা বললে তিনি বলেন কৃষকরা সকল প্রনোদনা ও প্রশিক্ষন নিয়ে তা অস্বীকার করছে।
আর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কাছে প্রশিক্ষন ও প্রনোদনার তালিকা চাইলে প্রথমে দিতে অস্বীকৃতি জানালেও পরবর্তীতে তথ্য অধিকার আইনে তথ্য চাইলে নিজেকে বাঁচাতে তার মনমত করে অসম্পূর্ণ তথ্য দেন।
সব অনিয়মের কথা অস্বীকার করে তিনি বলেন, এমন অভিযোগ করার সুযোগ নেই। আমি নিজে তদারকি করে তা বাস্তবায়ন করেছি।
আরো পড়ুন – দুর্ভিক্ষ আসছে এটা সত্য : সিপিডি
এ বিষয়ে জেলা কৃষি কর্মকর্তা বাবুল কুমার সূত্রধর জানান, কৃষিকে সমৃদ্ধ করা ও কৃষকদের কথা চিন্তা করে সরকার কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়।
যদি কেও ক্ষমতা অপব্যবহার করে টাকা লোপাট করে তা অবশ্যই দণ্ডনীয় অপরাধ; এমন ঘটনার সত্যতা পেলে তদন্ত করে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তবে ২০২১-২০২২ অর্থবছরের যমুনার চরের বরাদ্দকৃত টাকার পরিমান ও কতজন কৃষককে সাতটি প্রণোদনের আওতায় এসকল কিছু বিতরণ করা হয়েছে।
এবিষয়ে একাধিকবার তথ্য চাইলেও সঠিক কোনো তথ্য সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এবং জেলা কৃষি কর্মকর্তা দেননি। সম্পাদনা – অলক কুমার