সৌদি আরব থেকে বাংলাদেশে রেমিট্যান্স পাঠানোর খরচ তুলনামূলকভাবে বেশি উল্লেখ করে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, দুই দেশের আর্থিক খাত একসঙ্গে কাজ করলে অর্থ পাঠানোর এই ব্যয় উল্লেখযোগ্যভাবে কমানো সম্ভব।
মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) রাজধানীর বনানীর একটি হোটেলে আয়োজিত ‘সৌদি আরব-বাংলাদেশ ব্যবসা সম্মেলন ২০২৫’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। সম্মেলনের আয়োজন করে সৌদি আরব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এসএবিসিসিআই)। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
আহসান এইচ মনসুর বলেন, “সৌদি আরব থেকে প্রবাসীরা রেমিট্যান্স পাঠাতে ৬ থেকে ১০ শতাংশ পর্যন্ত খরচ দেন, যা তাদের জন্য একটি বড় চাপ। এই খরচ কমাতে দুই দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে যৌথভাবে কাজ করতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “
বাংলাদেশ ও সৌদি আরবের অর্থনীতি একে অপরের পরিপূরক। সৌদি আরবের প্রয়োজন দক্ষ ও অদক্ষ শ্রমিক, যা বাংলাদেশ সরবরাহ করছে। অন্যদিকে, সৌদি আরবের রয়েছে জ্বালানি ও বিনিয়োগ সক্ষমতা, আর বাংলাদেশের রয়েছে বিশাল বাজার ও উৎপাদন খাতের সম্ভাবনা। তাই দুই দেশের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণের সুযোগ অসীম।”
গভর্নর জানান, বর্তমানে বাংলাদেশের অর্থনীতি প্রায় অর্ধ ট্রিলিয়ন ডলার অতিক্রম করেছে এবং দেশটি দ্রুত ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতির পথে অগ্রসর হচ্ছে। তিনি বলেন, “বাংলাদেশ একটি সহনশীল অর্থনীতি। প্রাকৃতিক দুর্যোগ, বৈশ্বিক সংকট কিংবা রাজনৈতিক অস্থিরতা—কোনো কিছুই আমাদের প্রবৃদ্ধিকে থামাতে পারেনি। গত তিন দশকে প্রবৃদ্ধি কখনোই ৩.৫ শতাংশের নিচে নামেনি।”
তিনি সৌদি বিনিয়োগকারীদের আহ্বান জানান, “বাংলাদেশকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করুন এবং দীর্ঘমেয়াদে বিনিয়োগ করুন। বাংলাদেশ একটি স্থিতিশীল, দ্রুতবর্ধনশীল অর্থনীতি, যা সৌদি আরবের বিনিয়োগের জন্য আদর্শ গন্তব্য হতে পারে।”
সৌদি-বাংলাদেশ সম্পর্ক নিয়ে আহসান এইচ মনসুর বলেন, “দুই দেশের মধ্যে রাজনৈতিক, ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক গভীর। এখন সময় এসেছে অর্থনৈতিক ও আর্থিক সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করার। বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও শ্রমবাজারে সহযোগিতা বাড়াতে আমরা কাজ করতে চাই।”
তিনি আরও আশা প্রকাশ করেন, “সৌদি আরবে কর্মরত বাংলাদেশি শ্রমিকদের জীবনমান উন্নত হোক, তাদের আয় বৃদ্ধি পাক। পাশাপাশি, সৌদি পাবলিক ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড (PIF)-এর মতো বড় বিনিয়োগ তহবিল থেকে বাংলাদেশও যেন বড় প্রকল্পে বিনিয়োগের সুযোগ পায়।”