প্রায় দেড় হাজার বছরের পুরনো স্থাপনা হায়া সোফিয়া ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ। বাইজেন্টাইন সম্রাট প্রথম জাস্টিনিয়ানের আদেশে ষষ্ঠ শতকে এটি নির্মিত হয়। প্রায় এক হাজার বছর ধরে অর্থোডক্স খ্রিস্টানদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় কেন্দ্র ছিল হায়া সোফিয়া।
১৪৫৩ সালে ইস্তাম্বুল অটোমান সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত হলে স্থাপনাটিকে মসজিদে রূপান্তর করা হয়। প্রায় পাঁচশ বছর পর ১৯৩৪ সালে তুরস্কের প্রথম প্রেসিডেন্ট মুস্তফা কামাল আতার্তুক এটিকে জাদুঘর ঘোষণা করেন।
কিন্তু এ মাসের শুরুতে তুরস্কের শীর্ষ প্রশাসনিক আদালত হায়া সোফিয়ার জাদুঘরের মর্যাদা নাকচ করেন এবং সেটিকে আবারও মসজিদে রূপান্তর করা হয়।
শুক্রবার সেখানে জুমার জামাত অনুষ্ঠিত হয়। প্রায় ৯০ বছর পর হায়া সোফিয়ার আবার নামাজ পড়া শুরু হলো।
গ্রিস সরকার তুরস্কের এ সিদ্ধান্তকে ‘নিষ্ঠুর’ বলে বর্ণনা করে বলেছে, এর ফলে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা বাড়বে।
জুমার নামাজ আদায় করার জন্য শুক্রবার হায়া সোফিয়ার দরজা সাধারণ মানুষের জন্য খুলে দেওয়ার ঘোষণা আগেই দিয়েছিল তুরস্ক। এদিকে শুক্রবার সকাল থেকেই গ্রিস জুড়ে গির্জায় শোকের ঘণ্টাধ্বনি শোনা গেছে বলে জানায় বার্তা সংস্থা রয়টার্স। তুরস্কের পতাকাও পোড়ানো হয়েছে।
গ্রিসের এ আচরণ পছন্দ হয়নি তুরস্কের। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, ‘‘হায়া সোফিয়া মসজিদ নামাজের জন্য খুলে দেওয়ার অজুহাতে গ্রিস আরো একবার তুরস্ক ও ইসলামের প্রতি তাদের শত্রুভাবের প্রকাশ ঘটিয়েছে।”
এক বিবৃতিতে গ্রিসের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও নিজেদের ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছে, ‘‘একবিংশ শতাব্দীর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় আজকের তুরস্কের ধর্মান্ধতা এবং জাতীয়তাবাদ নিয়ে উন্মাদের মত আচরণে হতবাক হয়ে পড়েছে।”
শুক্রবার এক বক্তৃতায় গ্রীক প্রধানমন্ত্রী কিরিয়াকোস মিতসোতাকিস তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিজেপ তায়িপ এরদোয়ানকে ‘সমস্যা সৃষ্টিকারী’ বলেছেন, ‘যিনি একবিংশ শতাব্দীর সভ্যতাকে অপমান করেছেন’।
আকাশ সীমা থেকে শুরু করে সমুদ্র সীমাসহ ধর্ম এবং সাংস্কৃতিক নানা বিষয় নিয়ে দুই দেশের মধ্যে বিরোধ দীর্ঘদিনের।
সূত্র: https://bangla.bdnews24.com