নিজস্ব প্রতিবেদক : আদালতের কর্মচারীদের ৩ দফা দাবীতে সারা বাংলাদেশের ন্যায় টাঙ্গাইলেও জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেছে বাংলাদেশ বিচার বিভাগীয় কর্মচারী এসোসিয়েশন জেলা শাখা।
বুধবার (১১ নভেম্বর) জেলা প্রশাসকের পক্ষে স্মারকলিপি গ্রহণ করেছেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সার্বিক মো. আমিনুল ইসলাম।
এর আগে এক সংক্ষিপ্ত সভায় বক্তারা বলেন –
আমরা গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ এর বিচার বিভাগীয় অধস্তন আদালতে কর্মরত বিচার সহায়ক কর্মচারী।
বিচার বিভাগের কর্মচারী হওয়া সত্বেও বিচার বিভাগের সাথে সংশ্লিষ্ট আইন মন্ত্রণালয় কিংবা উচ্চ আদালতের কর্মচারীদের ন্যায় সুযোগ সুবিধা প্রদান না করে আমাদেরকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কর্মচারী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
বিচার বিভাগ ১লা নভেম্বর, ২০০৭ খ্রিস্টাব্দে নির্বাহী বিভাগ হতে পৃথকীকরণ হয়।
এরই ধারাবাহিকতায় ২০০৯ খ্রিস্টাব্দে বর্তমান সদাশয় সরকার কর্তৃক মাননীয় বিচারকদের জন্য “বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস বেতন স্কেল” নামে একটি স্বতন্ত্র বেতন স্কেল প্রদান করেন।
কিন্তু পরিতাপের বিষয়, আমরা একই দপ্তরে বিচারকদের বিচার কার্যে সহায়ক হিসেবে কাজ করলেও স্বতন্ত্র বেতন স্কেল থেকে বঞ্চিত হচ্ছি।
এছাড়াও আমরা বিচার বিভাগে চাকুরী করা সত্ত্বেও জনপ্রশাসনের কর্মচারী হিসেবে আমাদের পরিচিতি চরম বঞ্চনা ও পীড়াদায়ক।
পক্ষান্তরে, মাননীয় বিচারকগণ স্বতন্ত্র বেতন কাঠামোর পাশাপাশি দেওয়ানী আদালতের অবকাশকালীন সময়ে (ডিসেম্বর মাস) ফৌজদারী আদালতে দায়িত্ব পালন করার জন্য এক মাসের মূল বেতনের সমপরিমান বেতন প্রাপ্ত হন।
এছাড়াও প্রতি মাসেই বিচারিক ভাতা হিসাবে মূল বেতনের ৩০% প্রাপ্ত হন।
চৌকি আদালতের বিচারক চৌকি ভাতা প্রাপ্ত হন।
বক্তারা আরো বলেন –
পরিতাপের বিষয়, বিচার বিভাগের সহায়ক কর্মচারীগণকে বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস বেতন স্কেলের অন্তর্ভূক্ত না করায় তারা সকল সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছি।
আদালতের মাননীয় বিচারকবৃন্দ বিচার কাজ করেন।
অধীনস্থ কর্মচারীগণ বিচারকের বিচার কাজে সহায়তা করেন।
আদালতের সকল শাখার ব্যবস্থাপনা ও তত্ত্বাবধানসহ আদেশ মোতাবেক সকল কাজ সম্পাদনের মাধ্যমে কর্মচারীগণ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
আদালতের কর্মচারীরা বিচারিক কাজের অতি আবশ্যক সহায়ক কর্মচারী।
বিচারাঙ্গনে মামলা বৃদ্ধির ফলে বিচারকগণের সাথে সাথে কর্মচারীরাও দিন দিন অধিক কাজের চাপে ভারাক্রান্ত হয়ে পড়ছে।
আদালতের একজন সহায়ক কর্মচারী হিসেবে বিচার কাজে সহায়তা করাসহ আমানতদারীর মতো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন।
উপরন্তু সততা, নিষ্ঠা, বিশ্বস্ততা, দায়িত্বশীলতা, দক্ষতা ও দায়বদ্ধতার সহিত কার্য সম্পাদন করেন।
দাবীসমূহ গুলো হলো –
(১) অধস্তন আদালতের কর্মচারীদেরকে বিচার বিভাগীয় কর্মচারী হিসাবে গণ্য করত. বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস বেতন স্কেলের আলোকে বেতন ভাতা প্রদান;
(২) সকল ব্লক পদ বিলুপ্ত করে যুগোপযোগী পদ সৃজন পূর্বক হাইকোর্ট বিভাগ ও মন্ত্রণালয়ের ন্যায় যোগ্যতা ও জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে প্রতি ০৫ বৎসর অন্তর অন্তর পদোন্নতি/উচ্চতর গ্রেড প্রদানের ব্যবস্থা করা এবং
(৩) অধস্তন সকল আদালতের কর্মচারীদের নিয়োগ বিধি সংশোধন করতঃ এক ও অভিন্ন নিয়োগ বিধিমালা প্রণয়ন।
সংক্ষিপ্ত সভায় বক্তব্য রাখেন, এসোসিয়েশন টাঙ্গাইল জেলা শাখার সভাপতি জেলা ও দায়রা জজ আদালতের হিসাব রক্ষক মো. নজরুল ইসলাম।
আরো বক্তব্য রাখেন, সাধারণ সম্পাদক চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের রেকর্ড কিপার আবু বকর প্রমুখ।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক নাজির মো. নাসির উদ্দিন, জেলা কমিটির সহ-সভাপতি মো. মাসুদ রানা, চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট টাঙ্গাইলের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলাম।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন, জুডিশিয়াল পেশকার মোহাম্মদ গোলাম মওলা, স্টেনোগ্রাফার মো. আবু তাহের, জেলা জজ আদালতের সেরেস্তাদার মোহাম্মদ আজম আলী খান, স্টেনোটাইপিস্ট মো. দেলোয়ার হোসেন স্টেনোগ্রাফার মোহাম্মদ শফিউল বাশার।
আরো উপস্থিত ছিলেন, জেলা কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. হারুনুর রশিদসহ অন্যান্য কর্মচারীরা। সম্পাদনা – অলক কুমার