রাজধানী ঢাকায় গত ছয় মাসে অন্তত ৪০ জন গাড়ি ব্যবসায়ী চাঁদাবাজ চক্রের টার্গেটে পড়েছেন। চাঁদা না দিলে পরিবারের সদস্যদের অপহরণের হুমকিও পাচ্ছেন তারা। এমন পরিস্থিতিতে নিরাপত্তার দাবিতে গত রবিবার রাস্তায় নেমে মানববন্ধন করেছেন রিকন্ডিশন্ড গাড়ি ব্যবসায়ীরা।
ভুক্তভোগী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তথ্য অনুযায়ী, পেশাদার অপরাধীদের পাশাপাশি নতুন চক্রও যুক্ত হয়েছে এসব ঘটনায়। চাঁদাবাজদের অনেকেই বিদেশে বসে ফোনে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। বিশেষ করে সংযুক্ত আরব আমিরাত, মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুর থেকে হুমকির কল আসছে। এখন পর্যন্ত ছয় ব্যবসায়ী ভাটারা থানায় জিডি করেছেন।
গত ১৩ অক্টোবর ভাটারা এলাকায় এক ব্যবসায়ীকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ২০ লাখ টাকা দাবি করা হয়। পরে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে টাকা ও গাড়ি লুটে নেয় তিন সদস্যের একটি চক্র। ঘটনার পর পুলিশ যশোর থেকে গাড়িটি উদ্ধার ও চক্রের দুই সদস্য নিয়াজুর রহমান ও তার স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করেছে।
এদিকে প্রগতি সরণি, বারিধারা ও আশপাশের এলাকাগুলোতে একের পর এক চাঁদাবাজির ঘটনায় আতঙ্কে আছেন রিকন্ডিশন্ড গাড়ি ব্যবসায়ীরা। সর্বশেষ ১৫ অক্টোবর বারিধারায় ‘বেগ অটো’র সামনে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। এখন পর্যন্ত অন্তত ১২টি গাড়ির শোরুমে হামলার ঘটনা ঘটেছে।
বারভিডা (বাংলাদেশ রিকন্ডিশন্ড ভেহিক্যালস ইম্পোর্টার্স অ্যান্ড ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশন)-এর সভাপতি আবদুল হক বলেন, “দুবাইয়ে বসে মাফিয়া স্টাইলে হুমকি দিচ্ছে এক ব্যক্তি, যে নিজেকে সাবেক যুবলীগ নেতা হিসেবে পরিচয় দেয়। পুলিশকে জানিয়েও এখনো কার্যকর ব্যবস্থা দেখা যাচ্ছে না।”
ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, ৫ থেকে ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত চাঁদা দাবি করা হচ্ছে বিদেশি নম্বর থেকে, এবং সন্তানদের অপহরণের হুমকিও দেওয়া হচ্ছে। কাশেম দ্বীপ, দাদা বিনোধ ও পটকা বাবু নামে কয়েকজনের নাম এসেছে এসব ঘটনায়।
এদিকে পল্লবী, মোহাম্মদপুর ও মিরপুর এলাকাতেও চাঁদাবাজি, ছিনতাই ও গুলির ঘটনা ঘটছে। পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, তিন ভাই— মফিজুর রহমান মামুন, মজিবুর রহমান জামিল ও মশিউর রহমান— দীর্ঘদিন ধরে এই অপরাধচক্র নিয়ন্ত্রণ করছে।
ডিএমপি’র সাইবার ক্রাইম ইউনিট জানিয়েছে, অধিকাংশ হুমকি বিদেশি নম্বর থেকে আসছে, আর হামলায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলগুলোর নম্বর ভুয়া।
ঢাকা মহানগর পুলিশের ডিসি (মিডিয়া) তালেবুর রহমান বলেন, “চাঁদাবাজির ঘটনায় কেউ সুনির্দিষ্ট অভিযোগ দিলে পুলিশ অবশ্যই ব্যবস্থা নেবে।”











