সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ভোলাগঞ্জ সাদা পাথরের জন্য সুপরিচিত। প্রতিদিনই দেশ-বিদেশের অসংখ্য পর্যটক প্রকৃতির অপার সৌন্দর্য উপভোগে ভোলাগঞ্জ সাদাপাথর ঘাটে ভিড় করেন। এই ঘাটসংলগ্ন এলাকাতেই নির্মাণ শেষ হয়েছে আধুনিক ভোলাগঞ্জ স্থলবন্দর, যা আগামী অক্টোবরের প্রথম দিকে আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হওয়ার কথা রয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, এ বন্দর কেবল আমদানি-রপ্তানির জন্য নয়, বরং সম্পূর্ণ পর্যটনবান্ধবভাবে নির্মিত হয়েছে। এখানে পর্যটকদের জন্য পার্কিং, চিকিৎসাসেবা, খাবারের আয়োজন ও থাকার সুযোগ রাখা হয়েছে। এছাড়া বন্দরের ভেতরে নির্মাণ করা হয়েছে আধুনিক ক্যাফেটেরিয়া, মসজিদ, কাচঘেরা দোতলা পোর্ট ভবন, তিনতলা মাল্টি এজেন্সি ভবন, একটি গেস্ট হাউস, দুটি ডরমিটরি ও একটি ক্লিনিক।
ভোলাগঞ্জ স্থলবন্দরের প্রকল্প পরিচালক সারোয়ার আলম জানান, সাদাপাথরকেন্দ্রিক পর্যটনের কথা মাথায় রেখে পুরো অবকাঠামো তৈরি করা হয়েছে। বন্দর চালু হলে শুধু রাজস্ব আয় বাড়বে না, বদলে যাবে পুরো এলাকার চিত্রও।
বর্তমানে প্রতিদিন এখানে ২৮০–৩০০ ট্রাক চুনাপাথর আমদানি হয়, যা ম্যানুয়েল পদ্ধতিতে পরিচালিত হয়। বন্দর চালু হলে আধুনিক ব্যবস্থাপনায় আড়াই থেকে তিন ঘণ্টার মধ্যেই এ কাজ সম্পন্ন করা যাবে। এছাড়া ট্রাক চলবে নির্ধারিত রুট দিয়ে, ফলে প্রধান সড়কে পর্যটকদের যাতায়াতে কোনো বিঘ্ন ঘটবে না।
২০০৫ সাল থেকে ভোলাগঞ্জ শুল্ক স্টেশনের মাধ্যমে ভারতের খাসি হিলস জেলার মাজাই এলাকা থেকে চুনাপাথর আমদানি শুরু হয়। ২০১৯ সালে এটিকে দেশের ২৪তম স্থলবন্দর হিসেবে ঘোষণা করে সরকার। বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে প্রায় ১৭৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণকাজ বাস্তবায়ন করে অনিক ট্রেডিং করপোরেশন ও মজিদ সন্স অ্যান্ড মাসুদ স্টিল। কিছু প্রতিবন্ধকতা ও লুটপাটের ঘটনাতেও কাজ নির্ধারিত সময়ের আগেই শেষ করতে সক্ষম হয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো।
স্থানীয়রা আশা করছেন, ভোলাগঞ্জ স্থলবন্দর চালু হলে বাণিজ্যের পাশাপাশি পর্যটনের নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে। এতে কর্মসংস্থান তৈরি হবে এবং পুরো অঞ্চলের অর্থনৈতিক চিত্র বদলে যাবে।