গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী হিসেবে শম্ভু নাথ পাল টাঙ্গাইলে যোগদানের পর থেকেই তার বিরুদ্ধে নানা ধরনের অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠছে। কর্মস্থলে যোগদানের পর থেকেই ঠিকাদারি কাজ বাছাইয়ে পক্ষপাত, নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহারকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেয়া, বিল প্রসেসে ১% ঘুষ গ্রহণ, যাচাই-বাছাই না করেই ঘুষের বিনিময়ে বহুতল ভবন নকশা অনুমোদন ও নির্মাণের ক্ষেত্রে তদারকি না করা, ভূমি অধিগ্রহণে স্থাবর সম্পদ বেশি দেখিয়ে ঘুষ গ্রহণসহ বহুবিধ অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে।
স্থানীয় ঠিকাদার ও ভ‚ক্তভোগীদের অভিযোগ, তিনি নির্দিষ্ট ঠিকাদারদের পক্ষ নিয়ে টেন্ডার প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা নষ্ট করছেন। তিনি অনৈতিক সুবিধা গ্রহণ করে ঠিকাদারদের এপ্রুফড এ্যাস্টিমেট (অনুমোদিত প্রাক্কলন) সরবরাহ করে থাকেন। অনৈতিক সুবিধা গ্রহণের মাধ্যমে সরকারের উন্নয়নমূলক কাজের জন্য ভ‚মি অধিগ্রহনে জমি ও স্থাপনার অতিরিক্ত মূল্য দেখানো, এছাড়া চলমান প্রকল্পগুলোতে নকশা ও শর্ত অনুযায়ী কাজ না করে নি¤œমানের কাজ সম্পন্ন করায় সরকারি অর্থের অপচয় হচ্ছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ঠিকাদার বলেন, ইতিপূর্বে তিনি যখন টাঙ্গাইলে ছিলেন, তখনও তিনি একই ভাবে দুর্নীতি করেছেন। তখন কোর্ট বিল্ডিং নির্মাণের কাজটি দুর্নীতির মাধ্যমে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার মন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাকের নিকট আত্মীয় খন্দকার তারেক ইসলামের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান নূরানী কন্সট্রাকশনকে কাজটি পাইয়ে দেন। বিষয়টি সর্বজন শ্রæত। এখন তিনি একই পন্থায় “পরিবেশ ভবন” নির্মাণের অনুমোদিত প্রাক্কলনের কপি একজন ঠিকাদারকে দিয়ে তার কাছ থেকে অনৈতিক সুবিধা নিয়েছেন।
এসময় অন্য এক ঠিকাদার বলেন, আমি শুনেছি ১০ লাখ টাকায় বিষয়টি মিমাংসা হয়েছে। এসময় ওই ঠিকাদারের কাছে জানতে চাওয়া হয়, যদি আপনি কাজটি দেয়া হয়, তাহলে আপনি কত টাকা দিতেন। এসময় ঠিকাদার বলেন, আমি ১৫ লাখ টাকা দিয়ে হলেও কাজটি নিতাম।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, নির্বাহী প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দীর্ঘদিনের হলেও ৫ আগস্টের পর একটি রাজনৈতিক দলের ২/৩ জন সিনিয়র নেতার দাপটে তিনি বহাল তবিয়তে দায়িত্ব পালন করছেন।
ঠিকাদার ও নির্বাহী প্রকৌশলীর বক্তব্য –
পরিবেশ ভবনের কাজটির সর্বনিম্ন দরপত্র দাতা রাসেল আহমেদ বলেন, খোঁজাখুঁজি করে কোন কিছুই পাবেন না।
অভিযোগের বিষয়ে টাঙ্গাইল গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শম্ভু নাথ পাল বলেন, এই সকল অভিযোগ মিথ্যা। আমি কোন অনৈতিক কাজের সাথে যুক্ত না। বিষয়টি তাহার উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সরাসরি তদারকি করছেন বল্ওে জানান তিনি। তবে বিলের ১% এর বিষয়ে কিছু বলেননি তিনি।