নিজস্ব প্রতিবেদক : টাঙ্গাইলে সৃষ্টি একাডেমিক স্কুল ক্যাম্পাস-২ এর আবাসিক ভবনের ৮ম শ্রেণীর এক শিক্ষার্থীকে বলাৎকারের অভিযোগ উঠেছে শিক্ষকের বিরুদ্ধে।
এদিকে বলাৎকারের ঘটনার পরই ওই ক্যাম্পাসের আবাসিক গণিত বিষয়ের শিক্ষক প্রনয় সরকার পালিয়েছে।
শিক্ষক প্রনয় সরকার জেলার ঘাটাইল উপজেলার রসুলপুর ইউনিয়নের মমিনপুর গ্রামের আনন্দ মোহন সরকারের ছেলে।
আরো পড়ুন – সরকারি নির্দেশনা অমান্য করার ধারাবাহিকতা বজায় রেখে চলেছে সৃষ্টি
সোমবার (৩ জুন) বিষয়টি প্রকাশ হওয়ার পরই ওই শিক্ষার্থীর অভিভাবকরা সৃষ্টি একাডেমিক স্কুলে গিয়ে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিচার দাবী করেন।
পরে বিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় ওই শিক্ষার্থীকে সৃষ্টি একাডেমিক স্কুল থেকে টিসি নিয়ে চলে যান।
জানা গেছে, জেলার বাসাইল উপজেলার এক প্রবাসীর ছেলেকে ৮ম শ্রেণীতে সৃষ্টি একাডেমিক স্কুলের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের আবাসিকে ভর্তি করা হয়।
সম্প্রতি ওই আবাসিকের শিক্ষক প্রনয় সরকার রাতে শিক্ষার্থীকে তার রুমে নিয়ে বলাৎকার করে।
পরে ভবনে থাকা শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের সহায়তায় তাকে উদ্ধার করা হয়।
পরে ঘটনাটি যাতে প্রকাশ না পায় এবং প্রকাশ পেলে ওই শিক্ষার্থীকে স্কুল থেকে বের করে দেয়া মর্মে ভয় দেখানো হয়।
এই ঘটনার পর অভিযুক্ত শিক্ষক প্রনয় সরকার তার মায়ের অসুস্থতা দেখিয়ে স্কুল থেকে ছুটি নিয়ে আর বিদ্যালয়ে আসেননি।
এদিকে এই ঘটনার পরই ওই শিক্ষার্থী ভয়ে জুবুথুবু হয়ে পড়ে এবং তার পরিবারের সাথে কম কথা বলে।
পরে গত রবিবার (২ জুন) বিষয়টি পরিবারকে জানায় ওই শিক্ষার্থী।
পরে সোমবার (৩ জুন) সকালে শিক্ষার্থীর অভিভাবকরা বিদ্যালয়ে গিয়ে ঘটনার বিচার দাবী করেন।
কিন্তু বিদ্যালয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক না থাকায় সৃষ্টি স্কুলের আবাসিক ভবনের প্রধান মোস্তাফিজুর রহমান হ্যাপি কোন সদুত্তর দিতে পারেননি।
আরো পড়ুন – আনারস প্রতীক হারলে দেশ ছাড়া করার হুমকি বাসাইলের সংখ্যালঘুদের
পরে ওই শিক্ষার্থী ভর্তি বাতিল করে টিসি নেয় অভিভাবকরা। এসময় বিদ্যালয় থেকে মিমাংসার প্রস্তাব দেয়াসহ ২৫ হাজার টাকা দিতে চাইলে তা গ্রহণ করেনি শিক্ষার্থীর অভিভাবক।
ভূক্তভোগী শিক্ষার্থীর অভিভাবকের কথা –
বলাৎকারের শিকার শিক্ষার্থীর চাচা বলেন, ভাল লেখাপড়ার জন্য সৃষ্টির আবাসিকে ভর্তি করানো হয়েছিল।
কিন্তু শিক্ষকই যখন শিক্ষার্থীর সাথে খারাপ কাজ করে তাহলে নিরাপদ কোথায়। ঘটনাটি আমাদের জানানো হয়নি।
আরো পড়ুন – টাঙ্গাইলের সৃষ্টি আবাসিকের ছাত্ররা কি শিখছে? উদ্বিগ্ন অভিভাবকরা
বিচার চাইলে কর্তৃপক্ষ তালবাহান করে। মিমাংসার প্রস্তাব দেয়াসহ টাকা দিতে চেয়েছে। ওই শিক্ষকও পালিয়েছে।
ছেলেটার সাথে খুবই অন্যায় হয়েছে। ছেলেটা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।
কারোর সাথে তেমন কথা বলছে না। তার মনে ভয় কাজ করছে। আমরা আইনের আশ্রয় নিবো।
অভিযুক্ত শিক্ষক ও প্রতিষ্ঠানের কর্তাদের বক্তব্য –
এবিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক প্রনয় সরকারের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তার ব্যবহৃত ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
সৃষ্টি একাডেমিকের স্কুল ক্যাম্পাস-২ এর আবাসিকের প্রধান শিক্ষক মোস্তাফিজুর রহমান হ্যাপি জানান, বিষয়টি জানতে পেরেছি।
কিন্তু ওই শিক্ষক ক্যাম্পাস নেই। তার মায়ের অসুখ দেখিয়ে ছুটি নিয়ে আর বিদ্যালয়ে আসেনি। ঘটনাটি অনাকাঙ্খিত।
এবিষয়ে জানতে সৃষ্টি একাডেমিক স্কুলের চেয়ারম্যান ড. শরিফুল ইসলাম রিপনের মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।