গণহত্যায় জড়িতদের রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে গণঅধিকার পরিষদ কিশোরগঞ্জ জেলা। বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১২টায় শহরের পুরান থানা এলাকা থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করে শহরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে পুরান থানার সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ সদস্য ও গণমাধ্যম সমন্বয়ক আবু হানিফ বলেন, ‘জুলাইয়ে আওয়ামী লীগ যে গণহত্যা চালিয়েছে তাদের আর এই দেশে রাজনীতি করার অধিকার নাই। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের গণহত্যায় জড়িতদের বিচারের বিষয়ে সরকারের তেমন তৎপরতা দেখা যাচ্ছে না।
সরকারের প্রতি আমাদের আহ্বান আইন করে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা হোক। আওয়ামী লীগের যারা দোসর ছিলো তাদেরও বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। তিনি বলেন, সরকার যদি গণহত্যার বিচারে তৎপর না হয় তাহলে জনগণ এই সরকারের বিরুদ্ধে রাজপথে নামতে বাধ্য হবে। গত ১৫ বছর বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদ কায়েম করার জন্য সবচেয়ে বেশি সহযোগিতা করেছে জাতীয় পার্টি।
সেই জাতীয় পার্টির এক নেতার বাড়ি কিশোরগঞ্জ। গত কয়েক দিন আগে তার বিদেশে সফরের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। আমরা চাই অনতিবিলম্বে তাকে আটক করা হোক।
আবু হানিফ বলেন, কিশোরগঞ্জে পুলেরঘাটের চিনিকলের সরকারি মালামাল বিক্রি করার জন্য একটা চক্র কাজ করছে।
তাদেরকে সাবধান করে দিচ্ছি,
আপনারা সরকারি মালমাল অন্যায়ভাবে বিক্রি করতে পারেন না।
তিনি আরো বলেন, জুলাই গণহত্যায় জড়িত কয়েকজন আসামিকে ট্রাইবুনালে তোলা হয়েছিলো। তাদের চেহারা দেখে মনে হয়েছে কারাগারে তাদেরকে জামাই আদরে রাখা হয়েছে। অথচ আওয়ামী লীগের আমলে দেখেছি বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাদের আদালতে তোলার সময় কাউকে হুইলচেয়ার, কাউকে পুলিশের কাঁধে ভর করে আদালতে আনা হতো। অথচ আওয়ামী লীগের নেতাদের জামাই আদরে আদালতে তোলা হয়।
বাংলাদেশের প্রখ্যাত আলেম দেলওয়ার হোসেন সাঈদীকে কারাগারে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে। এই সরকারের কাছে আমাদের আহ্বান দেলওয়ার হোসেন সাঈদীর মৃত্যু কি স্বাভাবিক নাকি পরিকল্পিত হত্যা সেটা তদন্ত করার জন্য একটি কমিটি গঠনের আহবান জানাই।
গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদের এই সদস্য বলেন, আওয়ামী লীগ দেশে যেভাবে চাঁদাবাজি, দখলদারি করেছিলো, তারা পালিয়ে গেলেও তাদের সেই চাঁদাবাজি ও দখলদারি অন্য একটা দল চালাচ্ছে। তারা নিজেদেরকে নব্য ফ্যাসিস্ট হিসেবে আবির্ভাব করছে। আওয়ামী লীগের অবৈধ সব ব্যবসার হাল ধরেছে অন্য একটি দলের নেতাকর্মীরা। আওয়ামী লীগের পতন থেকে আপনাদের শিক্ষা নিতে হবে। আওয়ামী লীগের মত যারা চাঁদাবাজি, দখলদারি করছেন তাদের পরিণতিও আওয়ামী লীগের মত হবে। তিনি বলেন, ছাত্রদল গত ১৫ বছর ক্যাম্পাসগুলোতে ঢুকতে পারে নাই, এখন ছাত্রদল যদি ছাত্রলীগের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়, তাহলে ছাত্রসমাজ ছাত্রদলের বিরুদ্ধে অবস্থান নিবে। গতকাল কুয়েটে যে হামলা হয়েছে তার নিন্দা জানাই, সেই হামলায় জড়িতদের শাস্তি দাবি করছি।
সমাবেশ সঞ্চালনা করেন গণঅধিকার পরিষদ কিশোরগঞ্জ জেলার যুগ্ম আহবায়ক শফিকুল ইসলাম। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন গণঅধিকার পরিষদের কিশোরগঞ্জ জেলার সদস্য সচিব মোখলেছুর রহমান উজ্জ্বল, যুগ্ম আহবায়ক অভি চৌধুরী, সদর উপজেলার সদস্য সচিব আল মাহমুদ মোস্তফা, গণঅধিকার পরিষদ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জুনায়েদ আহমেদ, যুব অধিকার পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সুমন তালুকদার, জেলা যুব অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রমজান মিয়া, ছাত্রনেতা পায়েল চৌধুরী ও রিপন রাজ প্রমুখ।