ফল কিংবা ফলের রস স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী—এটা আমরা সবাই জানি। পুষ্টিগুণে ভরপুর হওয়ায় শরীরের প্রয়োজনীয় ভিটামিন, খনিজ ও শক্তি জোগায় এগুলো। তবে ভুল সময়ে বা ভুল পদ্ধতিতে খেলে সেই উপকার উল্টো ক্ষতিতেও পরিণত হতে পারে। এর অন্যতম উদাহরণ আখের রস।
আখের রসে রয়েছে প্রচুর কার্বোহাইড্রেট ও প্রাকৃতিক সুগার। পাশাপাশি ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়াম, আয়রন, ভিটামিন সি ও ই রয়েছে, যা শরীরকে শক্তিশালী রাখে। নিয়মিত ও পরিমিত পরিমাণে আখের রস খেলে হজমে সহায়তা করে, কোলেস্টেরল কমায় এবং ওজন কমাতে সাহায্য করে। কিডনি সুস্থ রাখার পাশাপাশি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতেও এটি ভূমিকা রাখে।
ব্রণ কমানো, হাড়ের ঘনত্ব বাড়ানো এবং ডিহাইড্রেশন দূর করতেও আখের রস বেশ কার্যকর। কিন্তু যতই গুণ থাকুক, উপকার করুক, এই ফলের রস যদি ভুল উপায়ে বা ভুল সময়ে খান, তবে হিতে বিপরীত কেউ আটকাতে পারবে না। এর ফলে শরীরে বাসা বাঁধতে পারে ব্যাকটেরিয়া।
গবেষণায় দেখা গেছে, আখের রস বানানোর মাত্র ১৫ মিনিট পরই সেটা আর খাওয়ার যোগ্য থাকে না।
দ্রুত অক্সিডেশনের কারণে এতে ব্যাকটেরিয়া জন্মাতে থাকে। শুধু তা-ই নয়, সেটা দ্রুত গতিতে বাড়তেও থাকে। আখের রস বের করার পর খোলা হাওয়ায় রাখলে, বাতাসে থাকা অক্সিজেনের কারণে সেটা দ্রুত পচতে শুরু করে। এর ফলে আখের রসে স্বাদ বদলে যায়। কেবল স্বাদ খারাপ হওয়া নয়, এটা স্বাস্থ্যের পক্ষেও ক্ষতিকারক হতে পারে।
অর্থাৎ আপনার একটা ছোট্ট ভুল কিন্তু বড় বিপদ ডাকতে পারে। তাই আখের রস বানানোর সঙ্গে সঙ্গেই সেটা পান করা উচিত। অথবা আখ কেটে সেটা চিবিয়ে খান। রস বানিয়ে ফেলে রাখবেন না। রাখলেও, সেটাকে সঠিক উপায়ে ঢাকনা দিয়ে রাখতে হবে। কেবল আখের রস বানিয়ে, সেটা কিছু সময় পর খেলেই যে ক্ষতি হতে পারে এমনটা নয়। অপরিষ্কার জায়গায় রাখা আখ ভালো করে না ধুয়ে তার রস খেলেও ক্ষতি হতে পারে।
অপরিষ্কার মেশিনে বানানো রসও সমান ক্ষতিকর। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন জায়গা থেকে সম সময় আখের রস খাওয়া উচিত, বা বাড়িতে বানানো উচিত। নতুবা ইনফেকশন হতে পারে।
একই সঙ্গে যাদের ডায়াবেটিস আছে তাদের আখের রস এড়িয়ে চলা উচিত। গর্ভবতী নারীদেরও এই ফলের রস খাওয়া উচিত নয়। কখনো কখনো, অতিরিক্ত আখের রস খেলে ওজন কমার বদলে বাড়তে পারে।











