নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আযম খানের বিরুদ্ধে চাঁদার দাবিতে টাঙ্গাইল সদর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন এক শিল্পপতি।
অভিযোগ পত্রে শিল্পপতি দাবি করেন চাঁদা দিতে রাজি না হওয়ায় তার টাঙ্গাইল শহরের বাসায় হামলা চালিয়ে ভাংচুর করা হয়েছে।
এই বিষয়ে টাঙ্গাইল সদর থানায় দায়েরকৃত একটি লিখিত অভিযোগে ওই শিল্পপতি বিষয়টি উল্লেখ করেছেন।
আরো পড়ুন – টাঙ্গাইলে চাঁদা না দেয়ায় শিল্পপতির বাসায় হামলা
ওই শিল্পপতির নাম মনির আহমেদ ওরফে মনা। তিনি এশিয়াটিক কোম্পানীর ব্যবস্থাপনা পরিচালক।
টাঙ্গাইল শহরের পূর্ব আদালত পাড়ার অধিবাসী ওই শিল্পপতির ঢাকা, গাজীপুর ও টঙ্গীতে শিল্প প্রতিষ্ঠান রয়েছে।
বুধবার সন্ধ্যায় মনির আহমেদ টাঙ্গাইল শহরের পূর্ব আদালত পাড়ায় তার বাসভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ আনেন।
এর আগে মঙ্গলবার রাতে তিনি টাঙ্গাইল সদর থানায় লিখিত অভিযোগ দেন।
এই ঘটনার প্রেক্ষিতে টাঙ্গাইল জেলা, সদর উপজেলা ও শহর বিএনপির নেতৃবৃন্দ টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছে।
সম্মেলনে জানিয়েছেন, আহমেদ আযম খানের ভাবমুর্তি নষ্ট করার জন্য তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে ওই শিল্পপতি মনির আহমেদ এই অভিযোগ এনেছেন।
এ অভিযোগ সম্পূর্ন মিথ্যা ভিত্তিহীন ও একটি মহলের ষড়যন্ত্র বলে দাবি করছেন টাঙ্গাইল জেলা বিএনপি।
শিল্পপতির অভিযোগ –
ওই সংবাদ সম্মেলনে মনির আহমেদ জানান, গত মঙ্গলবার তিনি তার বাস ভবনে কয়েকজন স্বজনকে দুপুরের খাবারের আমন্ত্রণ করেছিলেন।
তাদের মধ্যে তার আত্মীয় সখীপুর উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি শেখ হাবিবসহ বিএনপির রাজনীতির সাথে যুক্ত কয়েকজন ছিলেন।
আরো পড়ুন – অধ্যক্ষকে জনসমুক্ষে ক্ষমা চাইতে বললেন সমন্বয়করা
দুপুরে আড়াইটার দিকে আহমেদ খানের অনুসারী ২০/২৫ জন নেতাকর্মী তার বাসায় প্রবেশ করে।
তারা ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। চাঁদা দিতে রাজি না হওয়ায় গালাগালি ও ভাংচুর করে।
তার আমন্ত্রণে মধ্যাহ্নভোজে যোগ দিতে আসা ব্যক্তিদের কিল ঘুষি ও লাথি মেরে লাঞ্চিত করে।
মনির আহমেদ আরও অভিযোগ করেন এই ঘটনার তিন চার দিন আগে এক লোক তার কাছে এসে আহমেদ আযমকে ফোনে ধরিয়ে দেন।
তখন আহমেদ আযম তাকে জানান, আগামীতে টাঙ্গাইল-৮ (সখীপুর-বাসাইল) আসন থেকে তিনি (আযম) জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিবেন।
তাই ৫০ লাখ টাকা দিয়ে সহযোগিতা করতে হবে। টাকা দিতে অস্বীকার করলে সেদিন দেখে নেয়ার হুমকি দিয়েছিলেন আহমেদ আযম খান।
অভিযোগকারীর দাবি –
অভিযোগকারী মনির আহমেদ জানান, মঙ্গলবার রাত ১১টার দিতে তিনি নিজে টাঙ্গাইল সদর থানায় গিয়ে তার বাসায় হামলা ও চাঁদা দাবির বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
এতে আহমেদ আযম খান, টাঙ্গাইল শহর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. ইজাজুল হক ওরফে সবুজসহ ১২ জনের নাম উল্লেখ করেছেন।
পুলিশের বক্তব্য –
টাঙ্গাইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ লোকমান হোসেন জানান, ওই শিল্পপতি মনির আহমেদ একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছে, অভিযোগের তদন্ত শেষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সংবাদ সম্মেলনে যা বলেন জেলা বিএনপি –
অপরদিকে আহমেদ আযম খানসহ বিএনপির নেতা কর্মীদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ আনার প্রতিবাদে বুধবার দুপুরে টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন বিএনপি নেতৃবৃন্দ।
তারা অভিযোগ করেন, শিল্পপতি মনির আহমেদ একজন দুর্নীতিবাজ ও আওয়ামী দোসর।
তিনি নিজেই চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাসীদের নিয়ে তার বাসায় সভা করছিলো।
আরো পড়ুন – সমাজের শ্রেণী বিভাজন ও সাবভার্সন : বাংলাদেশে ডিভাইড অ্যান্ড রুলস নীতির কার্যকারিতা
তার বাসায় গিয়ে কোন খারাপ আচরণ করা হয়নি বা ভাংচুর করা হয়নি।
চাঁদাদাবির তো প্রশ্নই আসে না। তারা জানান, আহমেদ আযম খান একজন পরিচ্ছন্ন রাজনীতিবিদ।
তার বিরুদ্ধে চাঁদা দাবির যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা অত্যান্ত দুঃখজনক।
এই ষড়যন্ত্রের সাথে কিছু দলীয় নেতাকর্মী এবং বহিষ্কৃত নেতা কর্মী জড়িত রয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি নেতৃবৃন্দ জানান।
সংবাদ সম্মেলনে জেলা বিএনপির সভাপতি হাসানুজ্জামীল শাহীন, সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ ইকবাল, শহর বিএনপির সভাপতি মেহেদী হাসান, সাধারণ সম্পাদক ইজাজুল হক সবুজ, সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আজগর আলী, জেলা যুবদলের সদস্য সচিব তৌহিদুল ইসলাম, জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি আতাউর রহমান ও সাদেকুল আলম, সাবেক যুগ্ম-সম্পাদক আবুল কাশেম, সাবেক প্রচার সম্পাদক রফিকুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।