টাঙ্গাইলের ধনবাড়ীতে অভয়ারণ্য পাঠাগার থেকে নিয়ে যাওয়া পাঁচ শতাধিক বই রোববার রাতে ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) মধ্যস্থতায় সন্ধ্যা সাতটায় পাঠাগার কর্তৃপক্ষ এবং যারা বইগুলো নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে জমা দিয়েছিলেন, তাদের নিয়ে বৈঠক শুরু হয়। পরে আলোচনা শেষে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শাহীন মাহমুদ বইগুলো অভয়ারণ্য পাঠাগারে গিয়ে ফিরিয়ে দিয়ে আসেন।
উভয় পক্ষের সাথে কথা বলে জানা যায়, উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সভার শুরুতে ইউএনও মো. শাহীন মাহমুদ উভয় পক্ষকে ভুল বোঝাবুঝির অবসান ঘটিয়ে শান্তিপূর্ণ সমাধানের পথে আহবান জানান। পরে পাঠাগারের পক্ষ থেকে সাধারণ সম্পাদক দুর্জয় চন্দ্র ঘোষ কীভাবে বইগুলো পাঠাগার থেকে নিয়ে আসা হয়েছিল তার বর্ণনা তুলে ধরেন। পরে যেসব যুবক বই নিয়ে আসার নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তাদের পক্ষ থেকে ধনবাড়ী উপজেলা খেলাফত যুব মজলিসের সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম রব্বানী ওরফে রিশাদ বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, ভবিষ্যতে পাঠাগারে যাতে ধর্মবিরোধী কোন কর্মকাণ্ড না হয় এবং ধর্মবিরোধী ও নিষিদ্ধ কোন বই যেন না রাখা হয়। সভায় উপজেলা প্রশাসন, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
শেষে বইগুলো অভয়ারণ্য পাঠাগারে ফিরিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। সভা শেষে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শাহীন মাহমুদ উভয় পক্ষকে নিয়ে রাত সাড়ে ৯টার দিকে অভয়ারণ্য পাঠাগারে গিয়ে বইগুলো ফিরিয়ে দেন। এ বিষয়ে তিনি বলেন, উভয় পক্ষকে নিয়ে আলোচনা করে শান্তিপূর্ণ সমাধান হয়েছে। দুই পক্ষই বৈঠকে ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে এসেছিলেন। পরে তাদের সাথে নিয়ে বইগুলো পাঠাগারে দিয়ে আসা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বইগুলো নিয়ে আসার নেতৃত্ব দেওয়া গোলাম রব্বানী রিশাদ বলেন, আমরা পাঠাগার কর্তৃপক্ষকে আহবান করেছি, ভবিষ্যতে তারা যেন ধর্ম বিরোধী কোন কর্মকাণ্ড না করেন এবং ধর্মবিরোধী ও নিষিদ্ধ বই পাঠাগারে না রাখেন।
তবে পাঠাগারের সাধারণ সম্পাদক দুর্জয় চন্দ্র জানিয়েছেন, কোন ধর্মবিরোধী বই ছিল না। সেদিন যে বইগুলো নেয়া হয়েছে। তার মধ্যে কাজী নজরুল ইসলাম, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, সঞ্জিব ভট্টাচার্য, জাফর ইকবাল প্রমুখের বই ছিল।
প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালে ধনবাড়ী উপজেলা সদরে অভয়ারণ্য পাঠাগারটি প্রতিষ্ঠা হয়। “যৌক্তিক দ্বিমতকে স্বাগত”-এই স্লোগানকে সামনে নিয়ে পরিচালিত পাঠাগারটিতে বর্তমান সদস্য সংখ্যা দেড় শতাধিক।