যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানে সামরিক হামলার পরিকল্পনা অনুমোদন দিয়েছেন, তবে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেননি বলে জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিবিএস। এক শীর্ষ গোয়েন্দা সূত্র সিবিএসকে জানায়, ট্রাম্প চান ইরান পারমাণবিক কর্মসূচি থেকে সরে আসুক—এই সম্ভাবনা শেষ না হওয়া পর্যন্ত হামলা স্থগিত রাখা হয়েছে।
সূত্র মতে, ট্রাম্প ইরানের ভূগর্ভস্থ ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্র ‘ফোর্দো’তে হামলার চিন্তা করছেন।
অন্যদিকে, ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি ট্রাম্পের ‘আত্মসমর্পণের’ আহ্বান প্রত্যাখ্যান করে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, “যেকোনো মার্কিন সামরিক হস্তক্ষেপ ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনবে।”
ট্রাম্প অবশ্য সাংবাদিকদের বলেছেন, “আমি হামলা করতে পারি, আবার নাও করতে পারি—কেউ জানে না আমি কী করব।”
এর মধ্যে ইসরায়েল ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র ও পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে বলে দাবি করেছে। জবাবে ইরানও হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে। হামলার পর জাতির উদ্দেশে ভাষণে খামেনি বলেন, “আমরা ভয় পাই না, প্রতিক্রিয়া জানাব।”
জাতিসংঘে ইরানের মিশন এক্স-এ (সাবেক টুইটার) ট্রাম্পকে কটাক্ষ করে লিখেছে, “হোয়াইট হাউসের দরজায় কাকুতি-মিনতি করে ইরান কখনো মাথা নত করেনি। তার মিথ্যার চেয়ে তার কাপুরুষোচিত হুমকি আরও জঘন্য।”
এদিকে মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ জানিয়েছেন, প্রেসিডেন্ট নির্দেশ দিলে পেন্টাগন প্রস্তুত রয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন সামরিক উপস্থিতিও জোরদার করা হয়েছে। ইউএসএস কার্ল ভিনসন স্ট্রাইক গ্রুপ ও ইউএসএস নিমিটজ এখন গালফ অঞ্চলে অবস্থান করছে।
এফ-২২ ও এফ-৩৫ স্টেলথ যুদ্ধবিমানসহ মার্কিন সামরিক সরঞ্জামের গতিবিধি ইউরোপ থেকে মধ্যপ্রাচ্যের দিকে লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
এ পরিস্থিতিতে ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামির সঙ্গে ওয়াশিংটনে বৈঠকে বসছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। ইরান ইস্যুই হবে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু।
এদিকে ইসরায়েলি হামলায় ইরানে এখন পর্যন্ত ৫৮৫ জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস অ্যাক্টিভিস্টস। এর মধ্যে ২৩৯ জনই বেসামরিক নাগরিক। ইরানের পাল্টা হামলায় ইসরায়েলেও ২৪ জন নিহত হওয়ার খবর দিয়েছে দেশটির কর্তৃপক্ষ।