গাজায় ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ‘জিহাদ’ ঘোষণার আহ্বান জানিয়ে একটি বিরল ফতোয়া জারি করেছেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন মুসলিম ধর্মীয় ব্যক্তিত্বরা। শুক্রবার (৪ এপ্রিল) মধ্যপ্রাচ্যের প্রভাবশালী আলেমদের একটি গোষ্ঠী এই ফতোয়া জারি করেন, যেখানে ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে মুসলিম ও মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোর সামরিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের আহ্বান জানানো হয়েছে।
মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট আই জানায়, এই ফতোয়া জারি করেছেন আন্তর্জাতিক মুসলিম স্কলার্স ইউনিয়নের (আইইউএমএস) মহাসচিব আলী আল-কারদাঘি। এতে ১৫ দফার মাধ্যমে গাজায় চলমান ধ্বংসযজ্ঞ বন্ধে জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।
আলী আল-কারদাঘি বলেন, “গাজায় ইসরায়েলি হামলার বিরুদ্ধে মুসলিম দেশগুলো যদি কার্যকর পদক্ষেপ না নেয়, তবে তা ইসলামী শরিয়াহ অনুযায়ী নিপীড়িত মুসলমানদের বিরুদ্ধে একটি বড় অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে।” তিনি আরও বলেন, “ইসরায়েলি আগ্রাসনে সহায়তা করা, অস্ত্র বিক্রি, আন্তর্জাতিক জলপথ বা স্থলপথ ব্যবহারে সুযোগ দেওয়া শরিয়াহ অনুযায়ী নিষিদ্ধ।”
এই ফতোয়ায় ইসরায়েলের সঙ্গে শান্তিচুক্তি থাকা মুসলিম দেশগুলোর সেই চুক্তিগুলো পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানানো হয়েছে। ফতোয়ায় বলা হয়, এসব পদক্ষেপ বিশ্ব সম্প্রদায় বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের উপর চাপ সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখবে, যেন গাজায় হত্যাযজ্ঞ বন্ধ হয়।
এই ফতোয়াকে সমর্থন জানিয়েছেন আরও ১৪ জন প্রখ্যাত ইসলামিক স্কলার। তারা বলেছেন, এটি শুধুমাত্র রাজনৈতিক নয়, বরং ধর্মীয় দায়িত্বও বটে।
ফতোয়া প্রসঙ্গে মিডল ইস্ট আই জানায়, আলী আল-কারদাঘি বর্তমানে বিশ্বের অন্যতম প্রভাবশালী ইসলামিক চিন্তাবিদ। এর আগে এই সংস্থার নেতৃত্ব দিয়েছেন প্রখ্যাত আলেম ইউসুফ আল-কারযাভী।
প্রসঙ্গত, ‘ফতোয়া’ হলো ইসলামী আইন অনুযায়ী কোনো নির্দিষ্ট বিষয়ে দেওয়া ধর্মীয় মতামত বা দিকনির্দেশনা। যদিও এটি বাধ্যতামূলক নয়, তবে মুসলিম সমাজে এর প্রভাব বিশাল।