টাঙ্গাইলের রসুলপুরে এবার ‘জামাই মেলা খ্যাত’ শতাব্দপ্রাচীন বৈশাখী মেলা অনুষ্ঠিত হবে না। প্রতিবছর (সনাতন পঞ্জিকা অনুসারে) ১১-১৩ বৈশাখ ৩ দিনব্যাপী সদর উপজেলার রসুলপুর বাছিরন নেছা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে মেলাটি অনুষ্ঠিত হয়। প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে মেলা পরিচালনা কমিটি বন্ধের সিদ্ধান্ত ঘোষণা দিয়েছে। কমিটির আহবায়ক ফজলুল হক ও সদস্য সচিব আবুল হাশেম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ঐতিহ্যবাহী জামাই মেলা যুগ যুগ ধরে চলে আসা বাঙালী সংস্কৃতির সাথে মিশে গেছে। তারই ধারাবাহিকতায় শত বছর ধরে রসুলপুর গ্রামে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে ‘জামাই মেলা’। এ মেলাকে কেন্দ্র করে এলাকায় উৎসবের আমেজ বিরাজ করে। দূর-দূরান্ত থেকে জামাইয়েরা আসেন। ছোট ছেলেমেয়েদের জন্য আয়োজন করা হয় নানা বিনোদন ব্যবস্থার।
মেলায় থাকে ছোট-বড় প্রচুর স্টল, বিভিন্ন ধরনের খেলনা, কসমেটিকস, মিষ্টির দোকান, খাবারের দোকান। ঐতিহ্যবাহী এই মেলায় ব্যবসা করতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে এসেছেন ব্যবসায়ীরা। তিনদিনে রসলপুরসহ আশেপাশের অন্তত ৩০টি গ্রামের লাখো মানুষের সমাগম ঘটে এই মেলায়।
স্থানীয়রা বলেন, ‘জন্মের পর থেকেই এ মেলা দেখে আসছি। শ্বশুড়-শাশুড়িরা এ মেলা উপলেক্ষে জামাইদের হাতে টাকা দেন তাদের পছন্দ মতো কেনাকাটার জন্য। মেলা এবার হবে না তাই খুবই খারাপ লাগছে।
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বলেন, প্রতিবছরই মেলায় কেনা বেচা করে লাভবান হই। ভাইরাসের কারণে মেলা হবে না। আমরা ভালই ক্ষতিগ্রস্থ হবো।
রসুলপর গ্রামের সন্তান বিশিষ্ট কথা সাহিত্যিক ও সাংবাদিক রাশেদ রহমান বলেন বলেন, ‘আমাদের এ মেলায় ছোট বড় মিলিয়ে প্রায় ৩ শতাধিক দোকান বসে। এই মেলা টাঙ্গাইল জেলার মধ্যে ঐতিহ্যবাহী মেলা। মেলায় শুরু হওয়ার আগেই গ্রামের জামাই এবং বউয়েরা আসেন। তারা বিভিন্নভাবে মেলা উপভোগ করে থাকেন। মধ্যবয়স্ক এবং ছাত্র-ছাত্রীরা এই মেলা বেশী উপভোগ করনে। এক মাস থেকে মেলার প্রস্তুতি নেয়া হয়। করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধের জন্য মেলাটি বন্ধ করা হয়েছে। আশা করি আগামী বছর আবার জামজমকপূর্ণভাবে মেলা অনুষ্ঠিত হবে। আমরা অনেক আনন্দ করবো।