নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশে জনস্বাস্থ্য রক্ষা ও তামাকজনিত আর্থিক ক্ষতি ঠেকানো যাচ্ছে না।
তামাকদ্রব্যের সহজলভ্যতাই এখানে বড় বাধা। তাই দাম বাড়ানোর বিকল্প নেই।
সম্প্রতি রাজধানীর ফারস হোটেলে বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টারস ফোরাম আয়োজিত ‘জনস্বাস্থ্য রক্ষা ও আর্থিক ক্ষতি মোকাবিলায় তামাক নিয়ন্ত্রণ: গণমাধ্যমের কাছে প্রত্যাশা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা এ কথা বলেন।
ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডসের সহযোগিতায় ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ এ সভার আয়োজন করে।
সভায় বক্তারা বলেন, সিগারেটের দাম বাড়ানো হলে স্বল্পআয়ের মানুষ ধূমপান ছাড়তে উৎসাহিত হবে; দাম বাড়লে কিশোর-তরুণরাও ধূমপানে নিরুৎসাহিত হবে।
সভায় ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের ক্লিনিকাল রেজিস্ট্রার (রিসার্চ) ডা. শেখ মোহাম্মদ মাহবুবুস সোবহান মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
তিনি বলেন, টোব্যাকো অ্যাটলাস-এর তথ্য অনুযায়ী, দেশে প্রতিবছর তামাকের কারণে ১ লাখ ৬৬ হাজারের বেশি মানুষ মারা যায়।
২০১৮ সালের গবেষণায় দেখা গেছে, বছরে তামাকজনিত রোগের চিকিৎসা ও তামাকজনিত অন্যান্য কারণে ক্ষতি হয় ৩০ হাজার কোটি টাকারও বেশি।
সিগারেটের দাম বাড়িয়ে এই অকালমৃত্যু ও আর্থিক ক্ষতি অনেকাংশে প্রতিরোধ সম্ভব।
সভায় ২০২১-২০২২ অর্থবছরে সিগারেটে অভিন্ন করভারসহ (সম্পূরক শুল্ক চূড়ান্ত খুচরা মূল্যের ৬৫ শতাংশ) মূল্যস্তরভিত্তিক সুনির্দিষ্ট এক্সাইজ (সম্পূরক) শুল্ক প্রচলনের প্রস্তাব করা হয়।
নিম্নস্তরে প্রতি ১০ শলাকা সিগারেটের খুচরা মূল্য ৫০ টাকা নির্ধারণ করে ৩২.৫০ টাকা সুনির্দিষ্ট সম্পূরক শুল্ক আরোপ এবং মধ্যম স্তরে খুচরা মূল্য ৭০ টাকা নির্ধারণ করে ৪৫.৫০ টাকা সম্পূরক শুল্ক আরোপের প্রস্তাব করা হয়।
পাশাপাশি উচ্চস্তরের খুচরা মূল্য ১১০ টাকা (৭১.৫০ টাকা সম্পূরক শুল্ক) এবং প্রিমিয়াম স্তরে ১৪০ টাকা (৯১ টাকা সম্পূরক শুল্ক) করার কথা বলা হয়।
মাহবুবুস সোবহান জানান, প্রস্তাবিত কর কাঠামো বাস্তবায়ন হলে প্রায় ১১ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক ধূমপায়ী ধূমপান ছাড়তে উৎসাহিত হবে।
পাশাপাশি আট লাখ তরুণ ধূমপান শুরু করতে নিরুৎসাহিত হবে। দীর্ঘমেয়াদে ৩ লক্ষ ৯০ হাজার ধূমপায়ী ও চার লাখ তরুণের অকাল মৃত্যুও রোধ করা সম্ভব হবে।
সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টারস ফোরামের সভাপতি তৌফিক মারুফ ও সাধারণ সম্পাদক রাশেদ রাব্বি।
আরও ছিলেন ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডসের সিনিয়র পলিসি অ্যাডভাইজর আতাউর রহমান মাসুদ ও কমিউনিকেশন অফিসার সরকার শামস বিন শরিফ প্রমুখ। সম্পাদনা – অলক কুমার