নিজস্ব প্রতিবেদক : ভূঞাপুর লোকমান ফকির মহিলা ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ গোলাম রব্বানী রতন জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েব সাইটে দেখেছি বড় মনিরকে অপসারণ করা হয়েছে; তবে এখনও কোন চিঠি পাইনি।
এরআগে তিনি তার ভাই সংসদ সদস্য ছোট মনিরের ডিও লেটারের মাধ্যমে গোলাম কিবরিয়া বড় মনির সভাপতি হয়েছিল।
সোমবার (১ এপ্রিল) সোমবার এই অধ্যক্ষ আরো জানান, ১১ মার্চ ভ‚ঞাপুর লোকমান ফকির মহিলা কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি হন বড় মনির।
আরো পড়ুন – বিব্রতকর পরিস্থিতিতে টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগ নেতারা
ঢাকার তুরাগে অস্ত্রের মুখে কলেজছাত্রীকে তুলে নিয়ে ধর্ষণে অভিযুক্ত টাঙ্গাইলের আওয়ামী লীগ নেতা ও টাঙ্গাইল-২ আসনের সংসদ সদস্য তানভীর হাসান ছোট মনিরের বড় ভাই গোলাম কিবরিয়া ওরফে বড় মনিরকে কলেজ সভাপতির পদ থেকে বহিস্কার করার পর তাঁর মতামত জানতে চাইলে তিনি এসব কথা বলেন।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিদ্ধান্ত –
সোমবার (১ এপ্রিল) জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে গোলাম কিবরিয়া বড় মনিরকে কলেজের সভাপতির পদ থেকে বহিস্কার করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের পরিচালক মো. আতাউর রহমানের স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বড় মনিরকে বহিস্কার করে সেখানে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয়।
চিঠিতে বলা হয়, এডহক কমিটির মেয়াদ হবে ১০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত।
অভিযোগ –
জানা গেছে, গোলাম কিবরিয়া বড় মনির টাঙ্গাইল শহর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এবং জেলা বাস কোচ-মিনিবাস মালিক সমিতির মহাসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
সংসদ সদস্যের ভাই হওয়ার দাপটে তিনি ভূঞাপুর ও গোপালপুরে বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
ঢাকায় ধর্ষণের ঘটনার পরদিন থেকেই তিনি পলাতক রয়েছেন। এরআগে টাঙ্গাইলেও এক কলেজছাত্রীকে ধর্ষণের মামলা রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
সেই মামলায় উচ্চ আদালত থেকে তিনি জামিনে আছেন।
একটি ধর্ষণ মামলার আসামি বড় মনিরকে ছোট ভাই সংসদ সদস্য ছোট মনিরের ডিও লেটারের প্রেক্ষিতে লোকমান ফকির মহিলা কলেজের সভাপতি হিসেবে নিয়োগের দুই সপ্তাহ যেতে না যেতেই গত ২৯ মার্চ তুরাগ থানার প্রিয়াঙ্কা সিটি আবাসিক এলাকায় বড় মনিরের ফ্ল্যাট থেকে এক কলেজছাত্রীকে উদ্ধার করা হয়।
তাকে অস্ত্রের মুখে আটকে রেখে ধর্ষণ করা হয় বলে মামলায় বড় মনিরের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে ওই কলেজছাত্রী।
আরো পড়ুন – সাংবাদিকদের মধ্যস্থতায় নিষিদ্ধ পলিথিনের জব্দকৃত ট্রাক ছেড়ে দেয়ার অভিযোগ
ওইদিন রাতে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বর থেকে আসা একটি ফোন কলের সূত্র ধরে বড় মনিরের ফ্ল্যাট থেকে কলেজছাত্রীকে উদ্ধার করে পুলিশ।
তবে রাতেই ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান বড় মনির। পরে তার বিরুদ্ধে থানায় ধর্ষণ মামলা হয়েছে।
শিক্ষাবিদ ও শিক্ষামন্ত্রীর মতামত –
এই ঘটনার প্রেক্ষিতে দেশের শিক্ষাবিদ ও শিক্ষা মন্ত্রী বিরূপ মন্তব্য করেছেন।
শিক্ষাবিদ রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, বিচারাধীন মামলার একজন আসামিকে কি করে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান করা হয় এটা বোধগম্য নয়।
এটা গ্রহণযোগ্য তো শুধু নয়, ক্ষুব্দ হওয়ার মতো বিষয়। তাহলে নারীর নিরাপত্তা কি করে নিশ্চিত হয়?
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যপক মশিউর রহমান বলেন, সভাপতি পদে বড় ভাইকে নিয়োগ দিতে সংসদ সদস্য ছোট মনির কলেজটিতে ছোট মনির বার বার অনুরোধ করেছেন।
এসময় তিনি আরো বলেন, তার ভিতরে একরকম কোন অভিযোগ আছে, এটা আমার একেবারেই জানা ছিলো না।
অনৈতিকভাবে কেউ থাকাটা বা আইনের আওতায় আছে, বিচারের আওতায় আছে; এসব ক্ষেত্রেও আমরা অনেককে প্রত্যাহার করি।
এবিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, উল্লেখিত ব্যক্তি যাতে কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সভাপতি হতে না পারে বা নেতৃত্ব দিতে না পারে; সেটা আমাদের অবশ্যই দেখতে হবে।
যৌন হয়রানী, নারী নির্যাতনকারী, ধর্ষক তাদের কোন রাজনৈতিক পরিচয় নেই।