অতিথি প্রতিবেদক : ‘গত ২১ ডিসেম্বর জন্ম নেয়া কন্যার মা মাসুদা খাতুন বলেন, আমি প্রথম কন্যা সন্তানের মা হয়েছি।
পুলিশ কর্মকর্তার ফেসবুকে উপহারের বিষয়টি দেখে আমি পুলিশ ফাঁড়িতে এসেছি। উপহার পেয়ে আমি খুবই আনন্দিত।
মেয়ে হওয়ার জন্য আমার পরিবার খুশি হয়নি, কিন্তু আমি এবং আমার স্বামী অনেক খুশি।’ উনার মতো পুলিশ কর্মকর্তা একটি থানার দায়িত্বে থাকলে ওই এলাকার মানুষ ভালো থাকবে।
কন্যা সন্তানের বাবা গোলাম রাব্বানী রাসেল বলেন, ‘বছরে প্রথম দিনে আমি দ্বিতীয় কন্যা সন্তানের বাবা হয়েছি। আমি ও আমার স্ত্রী ও অনেক খুশি।
এসময় তিনি বলেন, কন্যা সন্তান হলে যিনি পুরস্কার দেন; উনার মতো পুলিশ কর্মকর্তার জন্য দোয়া করি। উনি এই সমাজের একজন সংস্কারক; উনার মতো মানুষরাই পারে মানুষের ভালো করতে।
তাদের মতো অন্যান্য কন্যা সন্তানের বাবা-মায়েরা বলেন, অনেক পুলিশ দেখেছি, উনার মতো ভালো মানুষ দেখি নাই। উনি যেখানেই যাবেন, সেই জায়গাটি আলোকিত হবে। এসময় তারা বলেন, দোয়া করি, উনি আরো বড় হোক।
মো. মোশারফ হোসেন টাঙ্গাইলের কাগমারী পুলিশ ফাঁড়িতে ইনচার্জের দায়িত্বে রয়েছেন।
‘কন্যা সন্তান সমাজের বোঝা নয়, আর্শিবাদ। কন্যা সন্তান আল্লাহ তা’আলার শ্রেষ্ঠ পুরস্কার। কন্যা সন্তান মা-বাবার জান্নাতের সুসংবাদ নিয়ে দুনিয়ায় আগমন করে।’
মঙ্গলবার (৫ জানুয়ারি) রাতে পুলিশ কর্মকর্তা মোশারফ হোসেন তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এমন স্ট্যাটার্স দিয়ে উপহারের ঘোষণা দেন।
বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ ব্যবহারকারীদের আলোড়িত করে। বুধবার (৬ জানুয়ারি) চার কন্যা সন্তারের বাবা-মা ওই পুলিশ কর্মকর্তার কাছে গিয়ে পুরস্কার গ্রহণ করেন।
কেন এমন উদ্যোগ নিলেন তিনি?
কেন আপনি এই উদ্যোগ নিয়েছেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন- ‘আমি চাকরি সূত্রে চরাঞ্চল ও গ্রাম পর্যায়ে ঘুরছি প্রতিনিয়ত।
ওইসব এলাকায় কন্যা সন্তান জন্ম হলে মায়েদের নানা বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। বিষয়টি আমার খুবই খারাপ লেগেছে।
সেই খারাপ লাগা থেকে আমি এই উদ্যোগ নিয়েছি। আমি এই অঞ্চলের মানুষকে সচেতন করতে চেয়েছি।
তিনি বলেন, এই মানুষগুলো সচেতন হলে, তাদের ভুল কম হবে; ধর্ষণ, বাল্যবিবাহের মতো ঘটনাও কম ঘটবে।
তিনি আরো বলেন, কাগমারী পুলিশ ফাঁড়ির এলাকায় যে দম্পতির কন্যা সন্তান জন্ম নিতে, তারা পুরস্কার পাবেন।
আমি ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছি। অনেকেই ফোন দিচ্ছেন; সচেতন মহল সাধুবাদও জানাচ্ছেন।
প্রথম দিনেই চার কন্যা সন্তানের বাবা-মাকে সামান্য উপহার দিয়েছি। আমার এই প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।
তবে এই উপহার শুধু পাবেন টাঙ্গাইলের কাগমারী পুলিশ ফাঁড়ির আওতায় বসবাসরত সাধারণ মানুষ।
সাধারণ মানুষের মন্তব্য –
বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক আলোড়নের সৃষ্টি করেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারীরা বিষয়টিকে একটি ব্যতিক্রমী ও সমাজ সংস্কারমূলক বলে অভিহিত করেছেন।
টাঙ্গাইলের সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক, পেশাজীবী, শ্রমজীবী মানুষের সাথে কথা বললে তারা বিষয়টির ভূয়সী প্রশংসা করেন।
তারা আরো বলেন, উনি সত্যি একজন ভালো মানুষ। এই বিষয়টি সত্যি প্রশংসার দাবি রাখে। মূল প্রতিবেদক – এনায়েত করিম বিজয়, সম্পাদনা – অলক কুমার