সাংস্কৃতিক আন্দোলনের পুরোধা, প্রথিতযশা প্রবীণ সাংবাদিক, ভাষাসংগ্রামী, মুক্তিযোদ্ধা কমরেড কামাল লোহানীর মৃত্যুতে গভীর শোক জানিয়েছেন প্রগতিশীল আন্দোলনের টাঙ্গাইলের নেতৃবৃন্দ।
তাদের মধ্যে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)’র টাঙ্গাইল জেলা কমিটির সভাপতি কমরেড অধ্যক্ষ আব্দুর রাজ্জাক ও সাধারণ সম্পাদক কমরেড ওয়াহেদুজ্জামান মতি, বাংলাদেশ উদীচী শিল্পিগোষ্ঠী, টাঙ্গাইল জেলা সংসদের সভাপতি অধ্যাপক দেবাশীষ দেব ও সাধারণ সম্পাদক মোস্তাক আহমেদ, বাংলাদেশ প্রগতি লেখক সংঘ, টাঙ্গাইল জেলা কমিটির সভাপতি অধ্যাপক শফিউদ্দিন তালুকদার ও সাধারণ সম্পাদক হেমায়েত হোসেন হিমু এক যৌথ বিবৃতিতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, কমরেড কামাল লোহানী ছিলেন এ দেশের প্রগতিশীল আন্দোলনের ‘বাতিঘর’। বাম-প্রগতিশীল আন্দোলনের নেতা-কর্মীদের কাছে তিনি অভিভাবক, পথপ্রদর্শক। সমাজতন্ত্র-সাম্যবাদী সমাজ প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে কমরেড কামাল লোহানী নিজেকে বিলিয়ে দিয়েছিলেন।
রাজনীতি আর সংস্কৃতির মেলবন্ধন ঘটিয়ে ষাটের দশক থেকে তিনি রাজপথে সোচ্চার। আমৃত্যু কমিউনিস্ট আদর্শে আস্থাশীল থেকে রাজপথে, সাংস্কৃতিক অঙ্গনে সোচ্চার থেকেছেন। ভাষা আন্দোলন, ৬২-র শিক্ষা আন্দোলন, ৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান, ৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন।
স্বৈরাচার ও সাম্প্রদায়িকতাবিরোধী আন্দোলন, ফ্যাসিবাদ ও সাম্রাজ্যবাদবিরোধী আন্দোলনে ছিলেন সামনের কাতারে। ৭২-এর সংবিধান পুনঃপ্রতিষ্ঠা জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক হিসেবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে খণ্ডিত ও বিকৃত করার বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন। ছিলেন সাংস্কৃতিক আন্দোলনের পুরোধা। রবীন্দ্র শতবর্ষ পালনে পাকিস্তানি নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে যাঁরা রুখে দাঁড়িয়েছিলেন, তিনি ছিলেন তাঁদের অন্যতম।
প্রগতিশীল সাংস্কৃতিক সংগঠন উদীচীর সভাপতি, ছায়ানট-এর সাধারণ সম্পাদক ও ক্রান্তির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা-সংগঠক হিসেবে সাংস্কৃতিক আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন। সাংবাদিক হিসেবেও তাঁর ভূমিকা অগ্রগণ্য।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, কমরেড কামাল লোহানী মানব মুক্তির সংগ্রামে অফুরন্ত প্রেরণার উৎস হয়ে থাকবেন। তাঁর সংগ্রামমুখর জীবন থেকে প্রগতিশীল আন্দোলনের কর্মীদের শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে। তাঁর স্বপ্নের সমাজতান্ত্রিক সমাজ প্রতিষ্ঠার লড়াইকে অগ্রসর করতে হবে। বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ কমরেড কামাল লোহানীর শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জানান।