টাঙ্গাইলের কালিহতী উপজেলার ভুক্তাগ্রামে করোনা ভাইরাস সংক্রমণে সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখতে শনিবার ১১ এপ্রিল বাজারটি স্থানীয় হাজী নওয়াব আলী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে স্থানান্তর করা হয়। পরদিন রোববার সকালে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দেওয়ান আব্দুর রাজ্জাক স্কুল গেইটে তালা ঝুলিয়ে দেয়। এতে এলাকায় চরম ক্ষোভ ও উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। উত্তেজিত এলাকাবাসী এর প্রতিকার চেয়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছে।
এলাকাবাসী জানায়, দীর্ঘদিন যাবৎ প্রধান তার নিজ বিল্ডিং তৈরির সরঞ্জাম ও প্রচুর পরিমানের মাটি বিদ্যালয় মাঠে ঢিপি করে রেখছেন, সেই কারণে বিদ্যালয় মাঠে বাজার স্থানান্তরে বাঁধা প্রদান করে। এছাড়াও বিদ্যালয়ের পাশে প্রধান শিক্ষকের শ্বশুরের জায়গায় একটি ভবন নির্মান করছেন। সেখানে পূর্বের দোকানের টিন, সার্টারসহ অন্যান্য মালামাল বিদ্যালয়ের শ্রেণীকক্ষসহ বিভিন্ন স্থানে রেখেছেন দীর্ঘদিন যাবৎ। এ নিয়ে বিদ্যালয়ে শিক্ষকদের মধ্যে বিরাজ করছে চাপা ক্ষোভ।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন শিক্ষক জানান, প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়টিকে নিজের ব্যক্তিগত সম্পত্তির মতোই ব্যবহার করেন। তিনি কাউকে মানেন না। কারণ বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতির কোন নজরদারী নাই। তারা আরো জানান, প্রধান শিক্ষকের নানা রকম অপকর্মও আছে। যার কারণে এলাকার অভিভাবকরা এই বিদ্যালয়ে তাদের সন্তানদের ভর্তি না করিয়ে আশেপাশের অন্যান্য বিদ্যালয়ে ভর্তি করান। এছাড়া বিদ্যালয়ের মাঠে বিকেলে এলাকার ক্রিড়ামোদী ছেলেরা খেলাধুলা করতে পারে না। এই প্রধান শিক্ষকের কারণে বিদ্যালয়টি ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে বলেও তারা মন্তব্য করেন।
এ বিষয়ে বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক আলমগীর সরকার বলেন, এই প্রধান শিক্ষক একজন করোনা পরিস্থিতিতে এলাকাবাসীর স্বার্থে সম্মিলিত ভাবে বাজারটি স্কুল মাঠে স্থানান্তর করা হয়। পরের দিন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক স্কুলের গেইটে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে। যাতে করে এলাকাবাসী চরম বিপাকে পড়েছে। অল্প পরিসরে চাপা জায়গায় বাজার থাকলে করোনায় সংক্রামণ হতে পারে।
ভুক্তা বাজার কমিটির সভাপতি আবু সুফিয়ান ফরিদ জানান, স্কুল মাঠ জনগনের, প্রধান শিক্ষকের পৈত্রিক সম্পত্তি নয়। করোনায় দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখতে স্কুল মাঠে ফাঁকা জায়গায় বাজার বসানোকে বাধা প্রদান করা দেশ বিরোধী কাজের সামিল।
এবিষয়ে কথা বলতে চাইলে প্রধান শিক্ষক ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন ও মুঠোফোন বন্ধ করে দেন।
ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলে বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা মরহুম আলহাজ্ব নওয়াব আলী ভূইয়ার জেষ্ঠ্য পুত্র মো. সোহরাব হোসেন ভূইয়া বলেন, এই স্কুল আমার বাপের করা, কিভাবে চালাবো সেটা আমাদের ব্যাপার, কারো কাছে শুনতে হবে নাকি?