বিশেষ প্রতিবেদক : টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের জায়গা দখল করে বলগেটের মাধ্যমে বালু মজুদ ও বিক্রি করার কারণে হুমকির মুখে পড়েছে বুড়িগঙ্গা নদী পুনরুদ্ধার প্রকল্প।
প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার ভিত্তিতে চলমান এই মেগা প্রকল্প এখন অনেকটাই ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে।
স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল অবৈধভাবে বালু বিক্রি ও মজুদ করার কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে এলাকাবাসী।
একই সাথে পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধিগ্রহণকৃত জায়গা অবৈধ দখলমুক্ত করে প্রকল্পটি রক্ষার উদ্যোগ নিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড; পরে তারা সরকারী জায়গা ছেড়ে দিতে অবৈধ দখলকারীদের চিঠি দিয়েছে।
এ ছাড়াও ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জায়গা দখল মুক্ত করতে সহযোগিতা চেয়ে জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন করেছে।
জানা গেছে, টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলায় বুড়িগঙ্গা নদী (নিউ ধলেশ্বরী-পুংলী-বংশাই-তুরাগ রিভার সিস্টেম) পুনরুদ্ধার প্রকল্পের আওতায় যমুনা নদী থেকে বুড়িগঙ্গা নদীতে পানি নেয়ার কার্যক্রম হাতে নেয় পানি উন্নয়ন বোর্ড।
সে কারণে টাঙ্গাইল অংশে ধলেশ্বরী-পুংলী-বংশাই নদীতে নদী শাসনের কাজ করা হয়।
সেই সাথে নদীর নাব্যতা ঠিক রাখার জন্য কালিহাতি উপজেলার বেলটিয়াবাড়ি এলাকায় একটি সেডিমেন্ট বেসিন নির্মাণ কাজের জন্য জায়গা নির্ধারণ করা হয়।
সেখানে প্রায় ৮৫ হেক্টর জমিও অধিগ্রহণ করে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
বর্তমানে সেডিমেন্ট বেসিন নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে; অধিগ্রহণের এক বছর পর থেকেই স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল জমি দখল করে বালুর ব্যবসা শুরু করে।
টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, স্থানীয় মো. আব্দুল হাই নামের এক ব্যক্তি প্রভাবশালী মহলের সহযোগিতায় প্রকল্পের অপটেকসহ সেডিমেন্ট বেসিন পর্যন্ত ভলগেটের মাধ্যমে বালু পরিবহণ করায় বড়বড় ঢেউয়ের তৈরি হয়; ফলে ওই ঢেউয়ের আঘাতে নদীর তীর ভাঙ্গন কবলিত হয়ে পড়ছে।
সেই সাথে সেডিমেন্ট বেসিন ও গাইডবাঁধ ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডকে পাত্তা না দিয়ে দীর্ঘদিন যাবৎ অবৈধ দখলের মধ্য দিয়ে বালু ব্যবসা চালিয়ে আসছে তারা।
এলাকাবাসীর অভিযোগ –
স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হওয়ায় তাদের বাড়িঘর ও ফসলি জমি নদী ভাঙ্গনের হাত থেকে কিছুটা রক্ষা পেয়েছে।
কিন্তু এভাবে ভলগেটে করে বালু আনায় গাইড বাঁধ ভেঙ্গে বসতভিটা ও ফসলী জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে।
সেই সাথে হুমকির মুখে পড়েছে বঙ্গবন্ধু সেতু হয়ে উত্তরবঙ্গমুখী গ্যাস পাইপ লাইন।
প্রতিদিন গ্যাস পাইপ লাইনের উপর দিয়ে শত শত বালুভর্তি ভারি ট্রাক চলাচল করছে।
এতে করে যে কোন সময় পাইপ ফেটে গিয়ে বড় ধরণের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এলাকাবাসী আরো অভিযোগ করে বলেন, দীর্ঘদিন যাবৎ প্রভাবশালী মহল ওই স্থানে বালু সংরক্ষণ করে বিক্রি করে আসলেও পানি উন্নয়ন বোর্ড অদৃশ্য কারণে কোন প্রকার ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি।
পাউবো’র বক্তব্য –
এই ব্যাপারে টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সিরাজুল ইসলাম জানান, চলমান বুড়িগঙ্গা নদী (নিউ ধলেশ্বরী-পুংলী-বংশাই-তুরাগ রিভার সিস্টেম) প্রকল্পের ভিতর দিয়ে ভলগেট দিয়ে বালু পরিবহণ ও মজুদ করায় প্রকল্পটি মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে।
আমরা অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রশাসনকে অনুরোধ করেছি। সম্পাদনা – অলক কুমার