বিশেষ প্রতিবেদক : টাঙ্গাইলের কালিহাতি উপজেলার বল্লা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হাজী চান মাহমুদ পাকিরের সরাসরি তত্ত্বাবধান ও নিয়ন্ত্রণে আবাদি জমির মাটি অবৈধভাবে কেটে বিক্রি করছে ওই এলাকার কয়েকজন ভূমিদস্যু।
মাটি বিক্রি করে গর্ত তৈরি করায় চরম বিপাকে পড়েছে এলাকার ধান চাষীরা।
বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় প্রশাসন দেখেও না দেখার ভান করছে বলেও অভিযোগ এলাকাবাসীর।
কিন্তু চেয়ারম্যানের ভয়ে তারা কেউই মুখ খুলতে রাজি হননি।
সরেজমিনে ওই এলাকা ঘুরে দেখা যায়, বল্লা গোরস্থান পাড়া টেঙ্গুরিয়া বাইদ এলাকায় তাঁত বোর্ডের পেছনে হাজী বাদশা মিয়ার জমির মাটি বেকু দিয়ে কেটে বিক্রি করছেন গফুর মিয়া নামের এক মাটি ব্যবসায়ী।
ঢাকা নিবাসী হাজী বাদশা মিয়া ও তার ভাইদের প্রায় ৫ একর জমি রয়েছে বল্লা গোরস্থান পাড়া টেঙ্গুরিয়া বাইদ এলাকায় তাঁত বোর্ডের পেছনে।
সেই জমির দায়িত্বে রয়েছেন বল্লা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হাজী চান মাহমুদ পাকির।
একপর্যায়ে চেয়ারম্যান পাকির বাদশা মিয়াকে তার জমির মাটি বিক্রির প্রস্তাব দেয়। এতে বাদশা মিয়া রাজি হলেও ঝামেলা পোহাতে চান না।
পরবর্তীতে পাকির সব দায়িত্ব নিয়ে পার্শ্ববর্তী বাড্ডা গ্রামের মাটি ব্যবসায়ী ভূমিদস্যু গফুর মিয়াকে দিয়ে ওই জমির মাটি বিক্রি শুরু করেন।
৫ থেকে ১০ ফুট গভীর করে কেটে মাটি বিক্রি করেছে চেয়ারম্যান হাজী চান মাহমুদ পাকির ও গফুর মিয়া গং।
ভূক্তভোগীদের জানান –
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বেশ কয়েকজন এলাকাবাসী ও চাষী জানান, চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে কতা কওন যাইবো না। আফনেরা যান গা; চেয়ারম্যান রে তো চিনেন না!!
এসময় কয়েকজন জানান, মাটি কাটার ফলে তাঁত বোর্ডের উত্তর-পূর্ব পাশের দেয়াল ও ভবন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে।
পরে এলাকাবাসীর চাপে সেখানে আবার কিছু মাটি দিয়ে গর্ত ভরাট করা হয়েছে।
এব্যাপারে সেচ প্রকল্পের মালিক মো. মাসুদ খান জানান, আমার গভীর নলকূপ সেচ প্রকল্পের আওতায় প্রায় ১৬শ’ শতাংশ ধানের জমি রয়েছে।
মাটি কেটে কেটে গর্ত তৈরি করার ফলে জমিতে দেয়া সেচের পানি গর্তে চলে যায়। এতে করে ধানের উৎপাদন খরচ বাড়বে আর গর্ত তৈরি করা ওই পাঁচ একর জমিতে ধান উৎপাদন হবে না। ফলে ধান উৎপাদন অনেক কম হবে।
জমির মালিক ও ব্যবসায়ীদের কথা –
জমির মালিক হাজী বাদশা মিয়া জানান, আমরা কেউই বাড়িতে থাকিনা, চাষাবাদও করতে পারি না; তাই জমিগুলোর দেখভালের দায়িত্ব চেয়ারম্যান হাজী চান মাহমুদ পাকির ও আব্দুল হাদির কাছেই দেই।
একপর্যায়ে চেয়ারম্যান আমাকে জমির মাটি বিক্রির প্রস্তাব দেয়।
ঝামেলার ভয়ে আমি প্রথমে রাজি না হলেও পরে চেয়ারম্যান আমাকে আশ্বাস দিলে আমি রাজি হই। সব দায়িত্ব তারই।
বিষয়ে জানতে চাইলে মাটি ব্যবসায়ী গফুর মিয়া বলেন, ভাই কোন কিছু জানার থাকলে চেয়ারম্যান সাহেবের কাছে জেনে নেন।
এবিষয়ে বল্লা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হাজী চান মাহমুদ পাকির মুঠো ফোনে বলেন, জমির দায়িত্ব আমার কাছে থাকলেও আমি উনাকে মাটি কাটার অনুমতির জন্য একটি দরখাস্ত লিখে আনতে বলেছিলাম; কিন্তু তিনি এখনো দরখাস্ত আনেননি।
এসময় তিনি আরো বলেন, সকল উন্নয়নমূলক কাজ করতে তো মাটির প্রয়োজন হয়। আপনি একসময় এসে চা খেয়ে যাবেন।
এ বিষয়ে কালিহাতী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রুমানা তানজীন অন্তরা মুঠোফোনে বলেন, বিষয়টি আমার জানা নাই। জেনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সম্পাদনা – অলক কুমার