ঈদুল আজহার প্রস্তুতি যতই তুঙ্গে উঠছে, দেশের বিভিন্ন প্রান্তের কোরবানির পশুর হাটগুলো ততই সরগরম হয়ে উঠছে। প্রতিদিন হাজারো মানুষ গরু কেনার উদ্দেশ্যে এসব হাটে ভিড় করছেন। একদিকে যেমন থাকে ঈদের আনন্দ-উৎসবের আমেজ, অন্যদিকে তেমনই সক্রিয় হয়ে ওঠে কিছু অসাধু চক্র—বিশেষ করে পকেটমাররা।
প্রতি বছর কোরবানির হাটে পকেটমারির অসংখ্য ঘটনা ঘটে। ভিড়ের সুযোগ নিয়ে পকেটমাররা অসাবধানী ক্রেতাদের নগদ টাকা, মোবাইল ফোন ও অন্যান্য মূল্যবান সামগ্রী হাতিয়ে নিচ্ছে। মূলত যারা নগদ টাকা নিয়ে হাটে আসেন বা মোবাইলে ব্যস্ত থাকেন, তারাই বেশি টার্গেট হন।
পকেটমাররা সাধারণত কয়েকটি কৌশলে তাদের কাজ সফল করে:
ভিড়ের সুযোগ নেওয়া: দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত প্রচণ্ড ভিড়ের সময় তারা দ্রুত হাত সাফাই চালায়।
দৃষ্টি সরিয়ে দেওয়া: হঠাৎ ধাক্কা বা কথার মাধ্যমে লক্ষ্যবস্তুর মনোযোগ সরিয়ে ফেলে।
দলবদ্ধভাবে কাজ: একজন চুরি করলে অন্যরা তাকে আড়াল করতে সাহায্য করে।
টার্গেট নির্বাচন: যাদের মানিব্যাগ পেছনের পকেটে থাকে বা ব্যাগে ঢিলেঢালা নিরাপত্তা থাকে, তারা সহজ শিকার।
পকেটমারদের কবল থেকে বাঁচতে করণীয়:
নগদ টাকার নিরাপত্তা: অতিরিক্ত টাকা না নিয়ে যাওয়াই ভালো। দরকার হলে সামনের পকেটে বা নিরাপদ স্থানে রাখুন।
ব্যাগের নিরাপত্তা: কাঁধে ঝোলানো ব্যাগ সবসময় সামনে রাখুন ও ভালোভাবে বন্ধ রাখুন।
মোবাইল ফোন ব্যবহারে সতর্কতা: ব্যস্তভাবে মোবাইল ব্যবহারে বিরত থাকুন। মোবাইল শরীরের কাছাকাছি ও নিরাপদ স্থানে রাখুন।
সতর্ক দৃষ্টি: হাটে প্রবেশ ও বের হওয়ার সময় চারপাশে নজর রাখুন। সন্দেহজনক কাউকে দেখলে দ্রুত ব্যবস্থা নিন।
পরিবারের নিরাপত্তা: পরিবারের সদস্যদের, বিশেষ করে শিশুদের প্রতি নজর রাখুন এবং সবাইকে সতর্ক করুন।
প্রয়োজনে পুলিশের সহায়তা নিন: কোনো সন্দেহজনক আচরণ দেখলে হাটে থাকা পুলিশ বা স্বেচ্ছাসেবকদের তা জানান।
ঈদ আনন্দের সময় যেন কোনো দুঃখজনক ঘটনা আনন্দে ভাটা না ফেলে, সেজন্য আমাদের সবারই সচেতন থাকা জরুরি। নিজে সতর্ক থাকুন, অন্যকেও সতর্ক করুন—এভাবেই নিরাপদ ও আনন্দঘন ঈদ উদযাপন সম্ভব।