জুলাই মাসের গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগের পতনের নেপথ্যে যুক্তরাষ্ট্র সক্রিয় ছিল বলে যে ধারণা ছড়িয়েছে, সেটিকে সরাসরি ষড়যন্ত্র তত্ত্ব হিসেবে উড়িয়ে দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক বিশ্লেষক মাইকেল কুগেলম্যান।
তিনি বলেন, ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর থেকে ওয়াশিংটনের নীতি পরিবর্তিত হয়েছে। বাইডেন প্রশাসনের মতো মানবাধিকার বা গণতন্ত্র নয়, ট্রাম্প প্রশাসনের মূল অগ্রাধিকার ব্যবসা-বাণিজ্য। এ কারণেই বাংলাদেশকে ঘিরে যুক্তরাষ্ট্রের নীতি অনেকটাই লেনদেনভিত্তিক।
কুগেলম্যান আরও জানান, ট্রাম্প প্রায় সব বিদেশি সহায়তা বন্ধ করেছেন, ইউএসএইড ভেঙে দিয়েছেন। তাই মানবাধিকার, গণতন্ত্র কিংবা সংখ্যালঘু অধিকারের বিষয়গুলো এখন আর অগ্রাধিকারে নেই।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নজর তুলনামূলক কম, যা অনেক ক্ষেত্রেই ইতিবাচক হতে পারে। নজরে থাকা দেশগুলোর মতো (যেমন ভারত) জটিলতায় না পড়াই ভালো।
বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি প্রসঙ্গে কুগেলম্যান বলেন, গত এক বছরে ধর্মভিত্তিক ডানপন্থী গোষ্ঠীগুলো রাজনৈতিক পরিসর পেয়েছে। যদি তারা গণতন্ত্রবিরোধী বা সহিংস কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ে তবে বড় সংকট তৈরি হতে পারে। এ বিষয়ে সন্ত্রাসবাদই সবচেয়ে বড় উদ্বেগ।
তিনি সতর্ক করে বলেন, প্রতিশোধমূলক রাজনীতি ও রাজনৈতিক মেরুকরণ দেশের জন্য বড় ঝুঁকি। আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ হওয়ায় অস্থিতিশীলতার আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে। তবে আগামী নির্বাচনে বিএনপির ক্ষমতায় আসার সম্ভাবনা বেশি, যদিও নির্বাচনকালে সহিংসতার ঝুঁকি রয়েছে।
কুগেলম্যান জোর দিয়ে বলেন, সময়মতো সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করা অত্যন্ত জরুরি। গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সরকারের ওপর জনগণের প্রত্যাশা ব্যাপক, তাই স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া চালিয়ে যাওয়া প্রয়োজন।
সবশেষে তিনি জানান, নতুন শুল্কনীতির কারণে যুক্তরাষ্ট্র থেকে পণ্য আমদানিতে বাংলাদেশের ওপর চাপ বেড়েছে।